বাজেটে ধনী-গরিবের বৈষম্য আরও বাড়বে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:১১ এএম, ১৪ জুন ২০১৯

আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষিত বাজেট অনেকটা খাবার ছাড়াই খাবারের প্লেট সাজানোর মতো। আয় বৃদ্ধির সামর্থ্য ছাড়া প্রবলভাবে ব্যয়-আকাঙ্ক্ষী। উন্নয়নের তুলনায় অনুন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবনা উদ্বেগজনক। বাজেট সমাজে ধনী-গরীবের বৈষম্য আরও প্রবল করবে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে প্রস্তাবিত বাজেট গ্রহণযোগ্য নয়।

গতকাল জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাজেট উত্থাপন করা হয়। সে বাজটের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গত বছরের মতো এবারও বাজেট বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেই। ১ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকার মতো যে বাজেট ঘাটতি দেখা দেবে শেষ পর্যন্ত তার বোঝা টানতে হবে জনগণকে।

সাইফুল হকের অভিযাগ, বাজেট প্রস্তাবনায় রাজস্ব আহরণে এনবিআরসহ সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা, আর্থিক খাতের চরম নাজুক পরিস্থিতি, বিনিয়োগে ঘাটতি ও অনুৎসাহ, নানা পন্থায় বেশুমার অর্থপাচার প্রভৃতি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর স্পষ্ট কোনো স্বীকারোক্তি নেই। করের আওতা বৃদ্ধি করার ব্যাপারেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেই।

উন্নয়ন ব্যয়ের তুলনায় অনুন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবনা ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুন্নয়ন ব্যয় যেখানে ৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা, সেখানে উন্নয়ন ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া এই উন্নয়ন ব্যয়ের মান নিয়ে যে গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে বাজেট বক্তৃতায় তার কোনো পর্যালোচনা বা আত্মসমালোচনা নেই। অর্থবছরের শেষে যেভাবে প্রকল্প শেষ করতে তড়িঘড়ি করে অর্থ ব্যয় করা হয় তা অনেক ক্ষেত্রে অপচয়ের নামান্তর হয়ে দাঁড়ায়। বস্তুত এডিপি বাস্তবায়ন হয় মাত্র ৩ মাসে।

তিনি বলেন, অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ, অব্যবস্থাপনা, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে চুরি, দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট ও অর্থপাচারের কারণে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার ভিত নজিরবিহীনভাবে যেভাবে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে, এই ব্যাপারে বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থমন্ত্রীর কোনো উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা যায়নি। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বিদ্যমান চরম নৈরাজ্য রোধেও অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বন্ধ কলকারখানা চালু ও নতুন শিল্পোদ্যোগে বরাদ্দ আশানুরূপ নয়।

বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, বাজেট প্রস্তাবনায় স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কোনো খবর নেই। বাজেটের উন্নয়ন দর্শন ধনী ও বিত্তবানদের আরও সম্পদশালী করবে এবং সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় আরও কমে যাবে। লুটেরা পুঁজিপতিবান্ধব এই বাজেট সমাজে অর্থ ও সম্পদের আরো পুঞ্জিভবন ঘটাবে, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলবে।

এফএইচএস/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।