ছাত্রদল নিয়ে উভয় সংকটে বিএনপি : গয়েশ্বর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪৪ পিএম, ১২ জুন ২০১৯
গত ১১ জুন বিএনপি কার্যালয়ে তালা দেয় ছাত্রদল

বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের আন্দোলন এবং নতুন কমিটি নিয়ে আমরা উভয় সংকটের মধ্যে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এটা নিয়ে আমরা উভয় সংকটে। এই যে ওরা (ছাত্ররা) দীর্ঘদিন জেল খাটলো, মামলা এবং পুলিশের হয়রানির শিকার হলো, অথচ ওদের অবদানের বিনিময়ে ওরা কী পাবে? ওদের কী মূল্যায়ন হবে? দোষটা কার? দোষ কারও না। কারণ, গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল তার কাজটি সঠিকভাবে করতে পারে না।

বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের আন্দোলনে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রদল বিরাট একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামের অনেক ঐতিহ্য আছে। তবে অতীতের মতো ওদের আন্দোলনের ধারাবাহিক ঐতিহ্যটা নেই। কিন্তু তারপরও তো তারা চেষ্টা করে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্ররা কোথায় থাকবে? কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ তারা ক্যাম্পাসে যেতে পারে না। তাই তাদের কর্মকাণ্ডটা ক্যাম্পাসভিত্তিক কিংবা ছাত্রদের নিয়ে কর্মকাণ্ডটা তারা করতে পারছে না।

গয়েশ্বর বলেন, ছাত্রদলের নিয়মিত কাউন্সিল হওয়া দরকার। কিন্তু কাউন্সিল হওয়ার মতো হয়তো পরিস্থিতি নেই, যার কারণে আমাদের কাউন্সিলগুলো হতে বিলম্ব হয়। এ কারণে, অনেকের ছাত্রত্ব থাকে না। আর কাউন্সিল নিয়মিত হলে ছাত্ররা তাদের অবদান অনুযায়ী পুরস্কৃত হয়।

ছাত্রদলের বিক্ষোভের বিষয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার যেটা হয়েছে, সেটাকে আমি অস্বাভাবিক মনে করি না। কারণ, বড় বড় রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনে প্রতিযোগিতাগুলো অনেক সময় প্রতিহিংসারও রূপ নেয়। সুতরাং এটাকে বড় করে বা নেতিবাচক করে দেখার কিছুই নেই। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে- সেটা হলো, ওদের বোঝানো এবং এই সিদ্ধান্ত বানচালের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। আর তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে মূল্যায়ন করে কীভাবে কী করা যায়, তা আমরা করবো। তাই আমি সবাইকে বলবো, এটাকে স্বাভাবিকভাবে নেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা তাদের (ছাত্রদলের) কথাগুলো শুনবো এবং সেই কথাগুলো শুনে আমরা সমাধান করার চেষ্টা করবো। আমি বিশ্বাস করি, ওরা এটা বুঝবে। সুতরাং ওদের সঙ্গে আলাপ করে আমরা এটার সমাধান করবো।

বিএনপি একটি বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গয়েশ্বর বলেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলবো, উনি নিজের চরকায় তেল দিক, তার চেহারাটা আয়নায় দেখুক। কারণ আমার সংগঠনকে তিরস্কার করে তার সংগঠনের দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো কারণ নেই। সুতরাং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের ঘর গোছানোর কাজটা আগে করুক।'

প্রশ্ন উঠেছে যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে বিএনপির কী লাভ হলো- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখান কোনো দলের লাভ-ক্ষতির হিসাব করার সময় না। আর আমি যদি দলীয় লাভের হিসাব করি তাহলো তো ঐক্য হবে না।

কবে নাগাদ বিএনপি মাঠে নামবে- জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা তো মাঠে নামি। কিন্তু আমাদের মাঠে নামাটা নামার মতো কেউ দেখে নাই। সেই দেখানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর বিএনপির জন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে। আর যদি ঐক্য নাও হয় তাহলে বিএনপি ঘরে বসে থাকবে? তাহলে তো জনগণের দল হিসেবে বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলো না।

আন্দোলনের জন্য বিএনপি কতটা সংগঠিত- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো সময় কোনো দল শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে এবং শতভাগ দল গুছিয়ে আন্দোলন করে না। কারণ, আন্দোলনের মাধ্যমেই দলটা গুছিয়ে আসে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ নেই- ক্ষমতাসীন দলের এই বক্তব্যের প্রক্রিয়া জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা মনে করি, আমার দেশে আমি বাস করি। সুতরাং আমার দেশের সমস্যা আমাকেই সমাধান করতে হবে।

খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের যখন ইচ্ছে তখন যে কোনো জেলখানায় নিতে পারে। এটা সরকারে ইচ্ছা। এখানে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

কেএইচ/জেডএ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।