নাসিমকে ডাকল না, আমি বললে কোর্টে দাঁড় করাবে : গয়েশ্বর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ১৮ মে ২০১৯

টাকার বিনিময়ে কোর্ট-কাচারী কেনা যায়- আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দুই দিন আগে নাসিম বলেছেন, কোর্ট-কাচারী নাকি টাকা দিয়ে কেনা যায়। কিন্তু বিচারপতি তা শোনেও নি, পড়েও নি। এটা আদালত অবমাননা হলো না? কোর্ট-কাচারী টাকায় কেনা যায় তার জানা আছে। এ কথা বলার পরেও আদালত থেকে কেউ কিছু বললো না। নাসিম সাহেবেকে ডাকলো না। একথা যদি আমি বলি তাহলে আদালতে নিয়ে দাঁড় করাবে।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর বলেন, আমরা জানি দানবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন যথেষ্ট নয়। রাজপথে আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আপোসহীন নেত্রীর কর্মী হিসেবে রাস্তায় দাঁড়াতে পারি, রাস্তার মোকাবিলা করতে পারি, তাহলে অবশ্যই এ সরকারের যত শক্তিই থাকুক, খালেদা জিয়াকে তারা জেলে আটক রাখতে পারবে না।

তিনি বলেন, সে কারণে আমাদের সকল নেতাকর্মীর একটি অঙ্গীকার থাকতে হবে, জেল জুলুম যাই হোক, আমরা নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য যে কোনো ধরনের আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকবো। এ অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি যখন সরকার লক্ষ্য করতে পারবে, তখন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ ত্বরান্বিত হবে। শুধুমাত্র আকুতি মিনতি অথবা মানবতার কথা বলে, অসুস্থতার কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর হৃদয় কখনও টলবে না। কারণ যার হৃদয় নেই, তার কাছে আবেদন নিবেদন অগ্রাহ্য হবে এটাই স্বাভাবিক। সে কারণে বলছি, আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

গয়েশ্বর বলেন, সর্বশেষ গতকাল প্রধানমন্ত্রীর একটি উক্তি নির্মম পরিহাস ও মানবতার প্রতি কটাক্ষ। একজন বৃদ্ধা বলা যায়, যার বয়স ৭৩ এর উপরে, তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ অবস্থায় নির্জন কারাগারে বসবাস করছেন। তাকে নিয়ে মশকরা করে তিনি পায়েশ খান। পায়েশ খাওয়াটা অপরাধ বা বিলাসের বিষয় না। এটা মানবতার সাথে অশোভন আচরণ পর্যায়ে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির কোনো বাধা নেই। একমাত্র বাঁধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, যে দৃষ্টান্ত আপনি স্থাপন করবেন সেই দৃষ্টান্ত ভোগ করার জন্য ভবিষ্যতে প্রস্তুত থাকবেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনি জেলে গিয়েছিলেন এবং আপনার সঙ্গে অশোভন আচরণ করার কারণে কঠোর এবং কঠিন ভাষায় সেদিন বেগম খালেদা জিয়ার নিন্দা করেছিলেন। আপনার পক্ষে কথা বলেছিল। সেদিন ব্যক্তিগতভাবে আমি কমপক্ষে ১৭ বার আপনার মুক্তি চেয়েছি। খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ওয়ান ইলেভেনকে গণতন্ত্রের ওপর হানা, আক্রমণ মনে করেছি। সেই কারণে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং তাদের ওপর যে অবিচার করা হয়েছে তার নিন্দা করেছি। কিন্তু বিনিময়ে আপনি কী করছেন? ক্ষমতায় আসার পরে বেমালুম ভুলে গেছেন। আগামীতে আপনার যদি কোনো বিপর্যয় হয় আপনার মুক্তি চাওয়ার জন্য মানুষ তো দূরের কথা, কোনো পশুপাখিও পাওয়া যাবে না।

চাল আমদানির সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, আজকে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হয়। আবার সরকার বলে খাদ্যে চাল উদ্বৃত্ত। আর কৃষকরা দাম পায় না। দাম না পাওয়ায় আজকে ধানে আগুন, কৃষকের ধানে আগুন, মনে আগুন। কোনদিন তারা রাস্তায় আগুন দেবে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

গয়েশ্বর আরও বলেন, আজকে যারা ব্যাংকের টাকা মেরে খায়, তাদেরকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আর যারা কৃষিঋণ নেয়, তাদেরকে জেলে ঢুকানো হচ্ছে। এই বৈষম্যের কারণে বোঝা যায় আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অর্থনীতি লুটপাটের অর্থনীতি। লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে জমছে। দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। অচিরেই অভাববোধ দৃশ্যমান হবে, অর্থের সঙ্কটে প্রত্যেকটা পরিবার ভুগবে।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

কেএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।