খালেদা জিয়ার মাথাব্যথা, সরকার টিপছে পা : জাফরুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৯

কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘যদি মাথাব্যথার জন্য পা টিপে দেয়া হয়, তাহলে কি মাথাব্যথা কমবে? না কমবে না। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই কাজই করছে সরকার।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা হলো তাকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া, পৃথিবীর আলো বাতাস দেখতে দেয়া। এটি হলো তার মূল চিকিৎসা। সেটা না করে যদি মাথাব্যথার জন্য পা টিপে দেয়া হয়, তাহলে কি মাথাব্যথা কমবে?’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় চিকিৎসা হবে একাকিত্ব দূর করা। এ জন্য কোনো চিকিৎসককে যুক্ত করা হয়নি। এ ছাড়া উনার (খালেদা জিয়ার) যে মানবাধিকার, নৈতিক অধিকার আছে, তাকে আর কিছু না হোক জামিনে মুক্তি দেয়া হোক। গণতন্ত্র না থাকলে বিচার বিভাগের অবনতি হবে। বিচার বিভাগের বিবেকহীনতা বলেই এজাতীয় ঘটনা। বিচারকদের মনে রাখতে হবে, কখনও না কখনও আপনাদের জনতার আদালতে দাঁড়াতে হবে।’

সভায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ঘটনা তুলে ধরে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল। পরে তিনি ক্ষমাও চেয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তি ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করলো। এ ছাড়া মানহানির মামলায় কোটি কোটি টাকা দাবি করলে নির্দিষ্ট হারে কোর্ট ফি দিতে হয়। ম্যাজিস্ট্রেট-জজ সাহেবরা সেটা জেনেও এসব মামলা গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন আটকে দেয়া হয়। একই ঘটনা ঘটছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও।’

বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কোনো কথা কাজে আসছে না এমন মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, ‘শাসন আজকে অপশাসনে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের পরিবার নিয়ে যার যার এলাকায় অবস্থান করার নির্দেশ দিলেও কয়জন থাকছেন? তাদের নড়াচড়া কি দেখতে পেয়েছেন? পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসকদের গ্রামে যাওয়ার কথা বলছেন। কোনো স্পন্দন কি আপনি শুনতে পারছেন? আজকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করেছেন, কিন্তু বিরোধী দলের কোনো মামলার ক্ষেত্রে কি তা হয়েছে? মামলা প্রত্যাহার করছেন না, জামিন দিচ্ছেন না। এটা না করে ভুল কাজ করছেন। আমি অনুরোধ করব, অবিলম্বে আলোচনার পথ সুগম করুন, যাতে আমরা দেশে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘যেভাবে চালাচ্ছেন পৃথিবীর কোনো জায়গায় কিছুদিন থাকা যায়, আমরা কোনো মর্মান্তিক পরিণতি চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশ সুখের সমৃদ্ধির হোক। আমরা চাই আপনার ভালো কাজের জন্য আপনাকে দেশবাসী স্মরণ করুক। আজকে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিন, খালেদা জিয়ার অন্ততপক্ষে জামিনের ব্যবস্থা করুন। বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগের অধীনস্থ করবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার জন্য মঙ্গল হবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। তার প্রথম শর্ত এদের মুক্তি দিন। দ্বিতীয়ত অবিলম্বে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তাতে হারলেও আপনার জয় হবে। তখন আপনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন। এখন পিতাকে বিক্রি করে কতদিন চলবেন?’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মো রহমতুল্লাহ প্রমুখ।

এসআই/এনডিএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।