আন্দোলন করতে না পারলে সরে দাঁড়ান : মাহবুব
বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ভালো ভালো বক্তব্য দিয়ে হবে না। আন্দোলন না করতে পারলে সরে দাঁড়ান। দেশের তরুণ সমাজকে নেতৃত্ব দেন। যারা রাজপথ উত্তপ্ত করতে পারবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবে। তাদের দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। আমরা ব্যর্থদের নেতৃত্ব চাই না।
তিনি বলেন, ৩ মাস ধরে বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয় না। অথচ আমরা ভালো ভালো বক্তব্য দিয়ে বেড়াই। সময় খুবই সংকীর্ণ। বেগম খালেদা জিয়া যে অবস্থায় আছে এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের মহাবিপদ। এই বিপদে আমরা ভালো ভালো বক্তব্য দিয়ে বেড়াবো তা চলবে না। আমরা ভালো ভালো বক্তব্য শুনতে চাই না। আমরা রাজপথ উত্তপ্ত করতে চাই। রাজপথ উত্তপ্ত করতে যা করা দরকার আমাদের নীতিনির্ধারকরা আশা করি তাই করবেন।
শুক্রবার জাতীয় ‘চেতনা বাংলাদেশের’ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যখন আমাদের নেতা-কর্মীরা জেল জুলুম অত্যাচারে অত্যাচারিত। মামলা হামলার জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তখন জাতীয় ঐক্য গঠন করা হলো। ড. কামাল হোসেন, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নার মত লোকদেরকে নেতৃত্ব দেয়া হল। সারা দেশের মানুষ এই জাতীয় ঐক্যের পক্ষে আসলো। তখন কেন শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেল?
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না এটা সারা বিশ্বকে দেখানোর জন্যই নির্বাচনে যাওয়া হয়েছে। এটা তো দেখানোর কিছু নাই। যখন সারাদেশের ভোটাররা বিএনপির পক্ষে তখন আমাদের নেতারা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করতে পারল না কেন? এই ব্যর্থতা কার? এই ব্যর্থতা জনগণের না এই ব্যর্থতা আমরা যারা নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের। এই ব্যর্থতার দায় দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু ভালো ভালো কথা বললেই হবে না। বলতে হবে এই ব্যর্থতা কেন আসলো? এর জবাব জনগণকে দিতে হবে।
রাজপথ উত্তপ্ত করা ছাড়া বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রেখেছে রাজনৈতিক কারণে তাকে মুক্ত করতে হবে রাজনৈতিকভাবে। আইনিভাবে তাকে মুক্ত করা যাবে না। অনেকেই বলেছেন বেগম খালেদা জিয়াকে আইনিভাবে মুক্ত করবেন কিন্তু বর্তমানে এর ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট ২৭-২৮ তারিখে যখন ঢাকায় সমাবেশ করতে চেয়েছিল। পুলিশ সমাবেশ করতে দেয় নাই। আর আমরা ভয়ে গর্তে ঢুকে গেছি। কেন আমরা সেদিন বেরিয়ে আসেনি? আমি আমার নীতি নির্ধারকদের বলবো এর ব্যর্থতা আপনাদের নিতে হবে। এর জবাব জনগণকে আপনাদের দিতে হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে রাস্তায় নামতে হবে জানিয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, গণতন্ত্র বলুন, ভোটারাধিকার বলুন, মানবাধিকার বলুন যা কিছু বলুন না কেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনো কিছুই মুক্তি পাবে না।
চেতনা বাংলাদেশের সভাপতি ও দোহার উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা রহিমের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, বগুড়া-৪ সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দলের সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, চেতনা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
কেএইচ/জেএইচ/এমকেএইচ