খালেদাকে কেরানীগঞ্জে নেয়ার ভাবনা মনুষ্যত্বহীন কাজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৮ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৯
ছবি-ফাইল

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, কেরানীগঞ্জ কারাগারের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। সেখানে গ্যাস-পানির ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। নির্মাণাধীন একটি কারাগারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্থানান্তরের সরকারি চিন্তাভাবনা মনুষ্যত্বহীনের কাজ।

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা চলছে। দেশনেত্রীকে চিকিৎসা না দেয়ার বিষয়ে সরকারের প্রতি দেশবাসীর যে ধিক্কার উঠেছে, সেটিকে আমলে না নিয়ে নাৎসিবাদী পন্থায় তারা তাদের মনুষ্যত্বহীন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেই চলেছে।

মিডনাইট নির্বাচন ও মহা কারচুপির ভোটে মন্ত্রীরা কালাপাহাড়ী মনোভাব নিয়ে কথা বলেন। তারা উচিৎ-অনুচিতের ধার ধারেন না। শুধু বিনাশ ও নির্মূলের মানসিকতা এই সরকারের। সরকারবিরোধী দল সমূহকে নতজানু করে রাখতেই বেগম জিয়াকে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের মনস্তত্বে ঔদার্য, ভিন্ন মত বা বিরোধী দলের প্রতি সহিষ্ণুতা, মানবিকতা, সততা ও সহানুভূতি নেই। গণতন্ত্র হরণ ও বিরোধী দল নিধন যাদের সরকারি কর্মসূচি তাদের কাছ থেকে মানবতা আশা করা যায় না।

সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম জিয়ার প্রতি জুলুমের উগ্রগতি বন্ধ করুন। এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসা প্রাপ্তির বন্ধ করা পথকে খুলে দিন। মানুষ এই সরকারের তৈরি অশান্তির আগুনে ভেতরে ভেতরে দগ্ধ হচ্ছে। দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলায় জনগণ ক্ষোভে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে। এই সীমাহীন অন্যায়ের জবাব জনগণ একদিন দেবে।

তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার গড়ে ওঠা ভাবমূর্তিকে কোনভাবেই বিতর্কিত করতে না পেরে, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পেরে মধ্যরাতের ভোটের সরকার তাকে জোর করে আটকে রেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার জীবন বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে তিনি একটি অস্বাস্থ্যকর ও পরিত্যক্ত কারাগারের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সের দেশনেত্রীকে আজ এভাবে দীর্ঘ এক বছর যাবৎ নির্মম-নিষ্ঠুর নিপীড়নের মাঝে বিনা চিকিৎসায় পুরাতন জরাজীর্ণ আবদ্ধ কারাগারে বন্দী করে রাখার উদ্দেশ্য, অনন্ত প্রতিহিংসার জ্বালা মেটানো।

দেশনেত্রীকে সরকার সরাসরি গলা টিপে হত্যা না করে এভাবে বিনা চিকিৎসায় অন্ধকার কারাগারে আটকিয়ে রেখে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করছে। দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি লক্ষ লক্ষ কণ্ঠে কোটি কোটি বার উচ্চারিত হলেও সরকার বেগম জিয়াকে নিয়ে তাদের নিজস্ব জীবনবিনাশী নকশা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেক অত্যাচার ও জ্বালা-যন্ত্রণা দিচ্ছেন খালেদা জিয়াকে। তাকে এক বছরের বেশি সময় কারাগারে আটকে রেখে কষ্ট দেয়ার পরেও কেন প্রতিহিংসা শেষ হচ্ছে না? এবার তাকে মুক্তি দিন।

বাকশাল মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিল- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে গোটা জাতি আঁতকে উঠেছে। তার এই বক্তব্য শুধু গণতন্ত্র নয়, নাগরিক স্বাধীনতাকে মৃত্যুর দক্ষিণ বাহু দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলার আগাম আভাস। বাকশাল হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার মৃত্যু পরোয়ানা।

কেএইচ/এমএসএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।