তৃতীয় গণ-অভ্যুত্থানের অপেক্ষায় দুদু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৫ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৯

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আইয়ুব খানও বুঝে নাই, এরশাদও এক সপ্তাহ আগে বুঝে নাই যে তার পতন হবে। শেখ হাসিনাও এখন বুঝতাছে না। হঠাৎ করে দেখবেন, তার পতন হয়ে গেছে। দেশের সব জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। এটা হবে, দেশের তৃতীয় গণ-অভ্যুত্থান হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হতাশ হওয়ার কিছু নাই। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান আছে, বিএনপি আছে, দেশের মানুষ তাদের ওপর ভরসা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।’ রোববার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আওয়ামী লীগ বলতে দেশে কিছু নাই’- উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ অফিসার, পুলিশ কমিশনার, এসি, ডিসিরা এখন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছে। আওয়ামী লীগ শেষ!’- মন্তব্য দুদুর।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি লিখিত দিতে পারি, যদি এ দেশে ফেয়ার নির্বাচন হয়…; আগে তো ১০টি সিট দিতাম, এখন শেখ হাসিনার জেতাও কষ্ট হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের মাজা শেখ হাসিনা কিভাবে ভেঙ্গে ফেলেছে! বিএনপির মাজা ভাঙ্গেনি। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মাজা ভেঙ্গে ফেলেছে।’

দুদু বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী, গায়ের জোরের প্রধানমন্ত্রী সবকিছু দেখতে পারেন। ব্যাংক দেখতে পারেন, টাকা দেখতে পারেন, আত্মীয়তা দেখতে পারেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের কিভাবে জেলে ভরতে হয়, নির্যাতন করতে হয়, তা দেখতে পারেন কিন্তু শিক্ষকদের যে সমস্যা সেটা তার নজরে আসে না। এমন একটা দেশে আমরা গত ১২ বছর ধরে বসবাস করছি। ভয়ঙ্কর বিপদ, সংকটময়- এমন একটি দেশের নাম বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা, যারা মানুষ গড়ার কারিগর, তারা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কথা বলার চেষ্টা করছে। অথচ শিক্ষামন্ত্রী ১৫ হাত বা ১৫/২০ মিনিট দূরে থাকেন। অথচ তিনি শিক্ষকদের কথা শুনছেন না।’

বেগম খালেদা জিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী উল্লেখ করে দুদু বলেন, তিনি আমার নেত্রী বলে বলছি না। বেগম জিয়া দেশের খুবই জনপ্রিয় নেত্রী। শহীদ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় এবং তার মৃত্যুর পরে বেগম খালেদা জিয়া যে সুযোগ-সুবিধা পেতেন, তার সবকিছু ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন স্বৈরাচারী আইনের বিরুদ্ধে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। তিনি ৯/১০ বছর আন্দোলন করেছেন। তার অনেক সহকর্মী এরশাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি একা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে গেছেন, আপস করেননি। যে কারণে তিনি আপসহীন নেত্রী। তিনি গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় প্রায় দেড় বছর ধরে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।’ দুদু বলেন, ‘দেশনেতা তারেক রহমানের নামে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, সেই মামলার প্রথম রায়ে তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সরকারের সাজানো বুদ্ধিতে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।’

‘নির্বাচন করে এই সরকার ক্ষমতায় আসে নাই’ মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কী জিনিস তা ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমলে মানুষ দেখেছে। বর্তমান বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচন নামে যে তামাশা, এর আগে, কোনো সরকারের আমলে মানুষ দেখেনি। নির্বাচন নিয়ে তামাশা হানাদার বাহিনী, পাকিস্তানি বাহিনী, ব্রিটিশ বাহিনী- কেউই দেখায়নি। কিন্তু শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে সারা জীবন জেলে রাখবে- সেটা সম্ভব নয়। কোনোকালেই সম্ভব নয়। সাময়িকভাবে আটকে রাখতে পারে। তিনি বের হবেন, শুধু বের হবেন না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। যেমন গতবার করেছেন।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘আইনের শাসন নাই বলেই রাস্তায় এত হত্যা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন নাই বলে শিক্ষকরা ভোট চুরির দায়ে মেয়েদের কাছে অপমানিত হয়ে এখনও শিক্ষকতা করছেন।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন মাস্টার, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আকতার হোসেন বাচ্চু, আজম খান, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএইচ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।