‘যারা যে কথাই বলুক ঐক্যের বিকল্প নেই’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৪ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন ‘ভুল’ হয়েছে বলে যারা মনে করছেন তাদের উদ্দেশ্যে ঐক্যফ্যন্ট মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যারা যে কথাই বলুক না কেন ঐক্যের বিকল্প নেই। ২০ দলীয় ঐক্যজোট যখন গঠন হয় তখনও একই কথা বলা হয়েছিল, ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময়ও ওই একই কথা।’

তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের মধ্যে সেতুবন্ধন সেটাই প্রমাণ করেছে। এটার অবশ্যয় প্রয়োজন ছিল। ঐতিহাসিকভাবে প্রয়োজন ছিল এবং প্রয়োজন আছে। আমরা মনে করি আরও বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন।’

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত স্মরণ সভায়ি তিনি এ কথা বলেন। ২০ দলীয় জোট শরীক জাতীয় পার্টির (জাফর) সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডক্টর টি আই ফজলে রাব্বি চৌধুরীর স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।

ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুব পরিষ্কার করে বলে গেছেন আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি হয়তো কারাগারে যাবো কিন্তু তোমরা ঐক্য গড়ে তুলবে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করবে।’

ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র বলেন, ‘হতাশ হবেন না। আমাদের অনেকের বয়স হয়ে গেছে। আমরা ভাবছি বোধ হয় আর কিছুই হবে না, অবশ্যই হবে, কারণ হতাশা তো শেষ কথা নয়। আমদের সামনে নতুন প্রজন্ম- তাদের সামনে বিরাট ভবিষ্যৎ, তারা অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ হবে। দেশকে ভালোবেসে তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এগিয়ে যাবেন, সূর্যোদয় হবেই, সামনের যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সেটা আপনার, অপনাদের।’

ফখরুল বলেন, ‘অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনগণ পরিষ্কার বলে দিয়েছে যে আমরা এ নির্বাচন মানি না। এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে তাতে যেন কোনো মতেই হতাশার জন্ম না হয়, সে জন্য সজাগ এবং প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে সচেতনভাবে জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় রাখার চেষ্টা করতে হবে। কেউ যদি মনে করেন একা এককভাবে কেউ এ ভয়াবহ দানবের সঙ্গে সংগ্রাম করে গণতান্ত্রিক বিজয় লাভ করবেন তাহলে আমার সোজা কথা তিনি সত্যটা উপলব্ধি করতে পারছেন না। আজকে ভয়াবহ এ দানবকে পরাজিত করতে হলে জনগণের ঐক্যের বিকল্প নেই। সেই জনগণের ঐক্যের মধ্যে দিয়ে আপনাকে বিজয় অর্জন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক প্রশ্ন, প্রশ্ন না থাকলে তো রাজনীতি হবে না। রাজনীতি চর্চার প্রয়োজন আছে এবং কোন পরিস্থিতিতে কোন পর্যায়ে কোন উদ্যোগ সঠিক কি-বেঠিক সে বিষয়ে আলোচনা আছে, সে আলোচনার জন্য ফোরাম রয়েছে, আশা করবো সেসব বিষয়ে ফোরামগুলোতে সঠিকভাবে আলোচনা হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে সারাদেশ ভারাক্রান্ত। রাস্তায় বের হলে দেখবেন সকলের মুখেই একটা ছায়া পড়েছে। সেই ছায়াটা হচ্ছে প্রিয় বস্তুকে হারানোর ছায়া। সেই ছায়াটা হচ্ছে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সাংবিধানিক অধিকার হারানোর বেদনার ছায়া।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেটা হয়েছে তা ইতিমধ্যে জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা নিয়ে আর কোনো প্রশ্নের সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।’

‘এটা একটা তামাশা হয়েছে। প্রহসন হয়েছে, এটা একটা নিষ্ঠুর প্রহসন। অনেকেই এ প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ এটা কেন করল? গত প্রায় ১০ বছর তারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে, যেভাবে খুশি রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে এবং তাদের ভাষায় উন্নয়ন হয়েছে, জনগণের উন্নতি হয়েছে, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। সব কথায় বাংলাদেশ তো এখন মধ্য আয়ের দেশের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। তাহলে নির্বাচনে এভাবে একেবারে সমস্ত জনগণকে বঞ্চিত করার প্রয়োজনটা কি ছিল?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের পুরানো দলের একটি। তাদের অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। সে অতীতটা হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের অতীত, স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্পৃক্ত হওয়ার অতীত এবং সব সময় সামনে থাকার অতীত, কিন্তু এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ফখরুল বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন সময় নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ যে দিন বাতিল করে, সেদিনই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এর ফলে দেশে আবারও অনিশ্চিত, অস্থিতিশীলতা এবং সংঘাতের রাজনীতি শুরু হলো। সেটার আজকে প্রমাণ হয়েছে। একটা জিনিষ খুব স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়েছে যে আওয়ামী লীগ খুব পরিকল্পিতভাবে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে।’

কেএইচ/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।