ইনুকে গণতন্ত্রের ছবক না দেয়ার আহ্বান বিএনপির
তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে গণতন্ত্রের ছবক না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেছেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালের ইনু গংরা গণবাহিনী তৈরী করে সন্ত্রাসের রাজনীতির সূচনা করেছিল। তারা সবসময় গণতন্ত্রের বিরোধী। তাই তাদের কাছ থেকে জনগণ গণতন্ত্রের ছবক শুনতে চায় না।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল হক সেলিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলো জাসদ-গণবাহিনী ইনুরা। তৎকালীন জাসদ ছাত্রলীগের একজন নেতা মহিউদ্দিন সাহেব তার বইয়ে জাসদের উত্থান-পতন নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সেখানে এ বিষয়ে বিশদ কথা লেখা আছে। সেই ইনুরাই এখন জাতির পিতা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে।’
রিপন বলেন, ‘ইনু সাহেবকে বলে দিতে চাই, আপনাদের অপকর্ম সম্পর্কে শুধু আমরাই বলি না। শাসক দলের শীর্ষ পর্যায় থেকেও ৭২-৭৫ পর্যন্ত অপকর্মের কথা এখন প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রক্তে রক্তক্ষরণ হয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের মনের ক্ষোভ দমন করতে পারবেন?’
৭২ থেকে ৭৫ সালে হাসানুল হকের ভূমিকা জাতির সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সময়কালে আপনার কি ভূমিকা ছিলো? আপনার গণবাহিনীর কি ভূমিকা ছিলো? এগুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করা উচিত। তবে যদি মন্ত্রিত্ব থাকার ইচ্ছে থাকে, তবে দলের সবার অপকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। দাবি করছি, যে অভিযোগ জাসদ ও গণবাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে, তিনি (ইনু) এটার জবাব দেবেন। জবাব দিতে না পারলে তার পদত্যাগ করা বাঞ্ছনীয় হবে।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, একদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যকাণ্ডের বিচারের কথা বলা, অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের ‘প্রেক্ষাপট সৃষ্টিকারীদের’ ক্ষমতায় রেখে মুজিবের হত্যকাণ্ডের প্রকৃত বিচার করা সম্ভব নয়। এতে করে তার আত্মার শান্তি পাবে বলে আমি মনে করি না।’
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করতে এবং সহানুভুতি পেয়ে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখতে ‘পরগাছা নেতারা’ বিএনপি চেয়ারপারস খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলে।
রিপন বলেন, ‘ইনু সাহেব বলেছেন, খালেদা জিয়া নাকি গণতন্ত্রের চৌকাঠ দিয়ে পেরিয়ে গেছেন। যারা সন্ত্রাসের রাজনীতি করেছেন, যাদের রাজনীতির সূচনা হচ্ছে সন্ত্রাস দিয়ে; তাদের কাছ থেকে যদি গণতন্ত্রের শিক্ষা নিতে হয় তার চেয়ে দূর্ভাগ্য আর কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দূর্ভাগ্য হচ্ছে, তার মন্ত্রিসভায় এমন সব মন্ত্রীদের ঠাঁই দিয়েছেন যাদের কেউ কেউ তার প্রয়াত পিতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছে। ৭২ থেকে ৭৫ সালে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যারা দায়ী ছিলেন, তাদের অন্যতম নেতা ছিলেন হাসানুল হক ইনু। যিনি সেই জাসদের অপভ্রংশের নেতা। এই ইনু এখন গণতন্ত্রের ছবক দেন। যা জাতির জন্য পরিহাস।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, আবদুল হালিম, দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান, সহ-দফতর আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএম/এআরএস/এমএস