রাজনীতিতে ৩৬ বছরে পা রাখলেন খালেদা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪১ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়া রাজনীতিতে ৩৬ বছর পার করেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। ৩ জানুয়ারি তার রাজনীতি জীবনের ৩৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দি জীবনযাপন করছেন খালেদা জিয়া।

শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘৩ জানুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবন পূর্ণ হলো। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসাবে দলে যোগ দেন। এর দুই মাসের মধ্যে গণতন্ত্র হত্যা করে হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করেন। আবার বন্ধ হলো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রবর্তিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়া। কণ্ঠরোধ করা হলো জনগণের। জাতীয় জীবনের ওপর দুঃসময় নেমে এলো। এইরকম এক ক্রান্তিকালে শুরু হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। সেই আন্দোলনে বেগম জিয়ার অবদান বীরুত্বগাঁথা।’

বেগম জিয়ার রাজনৈতিক জীবন প্রসঙ্গে যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, ‘সেই সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামে তিনি (বেগম খালেদা) জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে একক ও অনন্য নেতৃত্বে সুপ্রতিষ্ঠিত হন। দীর্ঘ ৯ বছরের সংগ্রামে, সংকটে আপোষহীন ধারায় জনগণের সঙ্গে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। শুরু হয় গণতন্ত্রের পথ চলা। তার ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে দেশ ও জাতির প্রতি অবদানের জন্য আমরা আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’

রিজভী বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চক্র এই মহান জাতীয়তাবাদী নেত্রীর উত্থান সহ্য করতে পারেনি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে যিনি আগলে রেখেছিলেন অতন্ত্র প্রহরীর মতো, তাকে পর্যুদস্ত করার জন্য চক্রান্তকারীরা চক্রান্তের জাল বুনতে থাকে। ভোটারশূন্য নির্বাচনে বিদেশি মদদপুষ্ট অগতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শক্তি গণতন্ত্রকে দাফন করতে বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রেখে জুলুমের পর জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা এবং কারাবিধি অনুযায়ী নিকটজনদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করতে নানা ফন্দিফিকির করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘৭ দিন পরপর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে তার দেখা করার কথা। অথচ বেগম জিয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ১৫ দিন পরপর সাক্ষাতের বিধান করে। এবার ২০-২১ দিন অতিবাহিত হলেও দেশনেত্রীর সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি। দলের সিনিয়র নেতারা ও দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বিগত চারমাস যাবৎ বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না।’

সাবেক এই ছাত্রনেতার ভাষ্য, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে মহা জালিয়াতি করে নির্বাচনের পর অবৈধ শাসকগোষ্ঠী আরও বেশি নিষ্ঠুর, বেপরোয়া ও ঔদ্ধত্য হয়ে উঠেছে। মিথ্যা জয়ের গরিমায় ধরাকে সরা জ্ঞান না করার পর্যায়ে তারা পৌঁছেছে। দেশটা এখন জনগণের নয়, দেশ এখন আওয়ামী লীগের একক তালুকদারিতে পরিণত হয়েছে। তাই সরকার বিদ্বেষ ও উগ্রতা দিয়ে বেগম জিয়াকে জুলুম ও নাজেহাল করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।’

‘বেগম জিয়ার ওপর সরকারি জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ আঁচ করতে না পারলেও তা যেকোনো মুহূর্তে প্রবল ঘূর্ণিতে টর্নেডোর আঘাত আসবে তা তারা টের পাচ্ছে না। দেশ ও জাতির প্রতি এত বড় প্রতারণা ও জালিয়াতির জন্য জনগণের আদালতে প্রকাশ্যে এগুলোর বিচার একদিন হবেই।’

নির্বাচন কমিশনের পিঠা উৎসবের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জ বলে জনগণকে বলি দিয়ে পিঠা উৎসব করছে।’

নির্বাচনে বিএনপির ‘ভুল’ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘কে ভুল করেছে ইতিহাস তার স্বাক্ষ্য দেবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।