সবই হচ্ছে সিইসির তত্ত্বাবধানে : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

>> জোয়ার এখন ওবায়দুল কাদেরের মুখে
>> ন্যায়বিচার প্রাচীন পাণ্ডলিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে
>> বিএনপির ১০ হাজার ৩২৯ জন নেতাকর্মী গ্রেফতার

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডারদের গুন্ডামিতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের প্রার্থীদের মিছিলে বাধা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট, কর্মী ও সমর্থকদের এলাকা ছাড়া করেছে। গ্রামে-গ্রামে চলছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র মহড়া। সারাদেশে এখনও ভীতিকর অবস্থা বিদ্যমান। সেনাবাহিনীকে মাঠে নামিয়ে হাত-পা বেঁধে রেখেছেন সিইসি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা)। তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। এগুলো সবই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ইশারায় এবং সিইসির তত্ত্বাবধানে।’

শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

‘গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, এবারে ভোটবিপ্লব হবে দুর্নীতি আর সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে, কেন্দ্র পাহারা দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করা হবে’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘নানা কারণে বাংলাদেশের নদ-নদীর উজানে পানির প্রবাহ কমে গেছে। আগে যে পদ্মাকে প্রমত্ত পদ্মা বলা হত এখন গরুর গাড়িতে করেও পদ্মা নদী পার হওয়া যায়। সুতরাং গণজোয়ারের যে কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের, সেই জোয়ার নদী আর সমুদ্রের মোহনায় নেই, সেই জোয়ার এখন ওবায়দুল কাদেরের মুখে চলে এসেছে। আর অরিজিনালি যেখানে জোয়ার থাকার কথা সেখানে পানিশূন্য বালির চর।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শুধু চর নয়, নির্বাচনে নদীসহ চর দখল করবে বলেই জাতীয়তাবাদী শক্তির অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বর্তমান শাসকগোষ্ঠী শুরু করে প্রায় অনেক দিন থেকেই। সেজন্য বানোয়াট মামলা দিয়ে নির্বাচনের প্রায় বছর খানেক আগেই সাজা দিয়ে দেশনেত্রীকে বন্দি করা হয়েছে। কারণ, রাষ্ট্রশক্তি সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয়। প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আদালত কারও টু শব্দ করার উপায় নেই। টু শব্দ করলে পরিণতি কী হবে তারও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা। সাবেক প্রধান বিচারপতিকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছে। এরপর শেখ হাসিনা নাৎসিসুলভ একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা যা চান এর বাইরে কাজ করার কোনও সুযোগ নেই। বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রাচীন পান্ডুলিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে। ন্যায়বিচার থাকলে বেগম জিয়া খালাস পেতেন। আসন্ন নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে যে ঢেউ উঠতো সেটিকে বাধা দেয়ার জন্য সরকার তাকে আটকে রেখেছে। ত্রাস সৃষ্টি করে একতরফা নির্বাচন করার জন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর হতে গতকাল ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট গ্রেফতার হয়েছেন ১০ হাজার ৩২৯ জন নেতাকর্মী। গায়েবি ও মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৮৪৪টি। মোট হামলার সংখ্যা ২ হাজার ৮৯৬টি, মোট আহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ২৫২ জন, মৃতের সংখ্যা ৯ জন। শুধু গতকালই বিভিন্ন জেলায় বানোয়াট মামলা দায়ের হয়েছে ৩৮টি, গ্রেফতার করা হয়েছে এক হাজার ১২৭ জন নেতাকর্মীকে, হত্যা করা হয়েছে একজনকে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।