বিএনপি-জামায়াতের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে : আব্দুর রহমান
বিএনপি-জামায়াতের অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। সন্দেহের সপক্ষে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে আসেনি। তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা প্রথম থেকেই নির্বাচনের মাঠে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করে, পোস্টার-ব্যানার নিয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, নাশকতা ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা লাগাতারভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। যার অংশ হিসেবে নেতারা নির্বাচন কমিশন, পুলিশ-সাংবাদিকসহ নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করছেন। হুমকি-ধমকি দিয়েছেন, তাদের থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সখ্যতা করা আর বিষধর সাপের সঙ্গে প্রণয়ে আবদ্ধ হওয়া একই কথা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কামাল হোসেনের সামনে আজ বিষধর সেই সাপের নগ্ন ফণা।’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে একের পর এক ষড়যন্ত্রের চিত্র পরিস্ফুট হচ্ছে। গতকাল (বুধবার) গণমাধ্যমে প্রকাশিত গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও বিএনএফ নেতা শওকতের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান কর্তৃক কামাল হোসেনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে। এই তারেক রহমান আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ জন।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার পর, গতকাল ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যার মধ্যদিয়ে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এ সময় বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে বলে দাবি করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।’
আব্দুর রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামীকাল তারা সারাদেশে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও সহিংসতার সৃষ্টি করতে করতে পারে। এমনকি ভুয়া ব্যালটপেপার ছাপিয়ে, নিজেরাই একটি ভুয়া ভিডিও তৈরি করে নকল ভিডিও বানিয়ে গুজব সৃষ্টি করতে পারে। বিএনপি-জামায়াত ঐক্যফ্রন্ট হলো অন্ধকারের শক্তি। এই অন্ধকারের অপশক্তি ক্ষমতায় গেলে কী হবে তা বাংলাদেশের মানুষ ভালো করে জানেন।’
বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে চরম হতাশা ও নিরাশার পাশাপাশি এক ধরনের হিংস্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে উল্লেখ করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কায় দিকভ্রান্ত নাবিকের মতো পথ খুঁজে ফিরছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্টের পুরনো গেম আর বাস্তবায়ন করা সহজ হচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিএনপি আর সুবিধা করতে পারছে না। দেশের মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বিএনপি নেতাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে তা স্পষ্ট হয়েছে। গতকাল তারা বলেছে মাঠে বিএনপির কর্মী নেই। শুধু কর্মী নয়, ভোটের মাঠে বিএনপির কোনো অবস্থান নেই। নিজেদের চরম দুরবস্থা ও নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কা থেকে বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট দেশবিরোধী অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
বিএনপি-জামায়াতের অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আছে-এমন দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে আসেনি। তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা প্রথম থেকেই নির্বাচনের মাঠে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করে, পোস্টার ব্যানার নিয়ে মিথ্যাচার অপপ্রচার, নাশকতা ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। একদিকে তারা লাগাতারভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। যার অংশ হিসেবে নেতারা নির্বাচন কমিশন, পুলিশ-সাংবাদিকসহ নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করছেন। হুমকি-ধমকি দিয়েছেন, তাদের থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসী ভালো করেই জানেন, যারা নির্বাচনের আগে এই ধরনের দুর্ব্যবহার করতে পারে, তাদের ভোট দিলে কী হবে। এ ধরনের ব্যক্তিরা নির্বাচিত হলে দেশের এবং দেশের মানুষের সঙ্গে তারা কী ধরনের ব্যবহার করবে, এখনি তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
এইউএ/এসআর/আরআইপি