সুধাসদনে পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘বৈঠকের’ অভিযোগ রিজভীর
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক বাসভবন ‘সুধাসদনে’ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ‘বৈঠক’ করেছেন বলে অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, ‘গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ডিএমপি কমিশনার, ডিআইজি ও কাউন্টার টেররিজমের প্রধান, এডিশনাল কমিশনার, ডিসি-রমনা, সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপারসহ অনেক অফিসার সুধাসদনে বৈঠক করেছেন। এগুলো কিসের আলামত।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট প্রথম থেকেই বলে আসছে যে, সরকার যতই দূরভিসন্ধি ও উসকানিমূলক আচরণ করুক না কেন, কোনও পরিস্থিতিতেই তারা নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাবে না। তার প্রমাণ আপনারা গত কয়েকদিনে নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন স্বচক্ষে অথবা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।’
রিজভী বলেন, ‘গত ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত জেল-জুলুম, হামলা-মামলা ইত্যাদি উপেক্ষা করেও সারাদেশে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত জনসমুদ্রতূল্য সমাবেশ, আর বিপরীতে রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা ব্যবহার করে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের পরও জনমানবহীন সমাবেশের সুদৃশ্য সেই মঞ্চ থেকে শুধুই আওয়ামী নেতাদের ফাঁপা উন্নয়নের বাগাড়ম্বর। তাদের বক্তব্য শোনার কোনও লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘বিবিধ সেন্সর ও কালাকানুনের কারণে জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় অল্প কিছু, কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত অসংখ্য সংবাদ ও তথ্য থেকে আমরা জানতে পারছি, গণবিচ্ছিন্ন এই সরকার তাদের নিয়োগকৃত দলীয় মনোভাবাপন্ন কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে এই নির্বাচনকে ঘিরে নানা ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড করছে বা পরিকল্পনা করে রাখছে। আমরা এ পর্যন্ত সমর্থিত ও অসমর্থিত সূত্র থেকে এ বিষয়ে যেসব তথ্য পেয়েছি তা পরবর্তী ব্রিফিংয়ে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
‘তবে আশার বিষয় হলো, কুচক্রী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংখ্যা দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রমনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তুলনায় এতটাই কম যে, একান্ত নিজ লোক ভেবে যাদের নিয়ে তারা সেই ষড়যন্ত্রমূলক সভাগুলো করছে তারাই আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমির ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় এনে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে,’- বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি বিএনপি এবং আপামর গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষ থেকে সেই সব বীর ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই, যারা শত চাপ ও প্রতিকূলতার মাঝেও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন, তাদের কাজ দেশপ্রেমের সমতুল্য। দেশপ্রেমসুলভ আচরণকে জাতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে। পাশাপাশি আমি বিপথগামী সেই সব মুষ্টিমেয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বলতে চাই, যা ভুল হওয়ার হয়ে গেছে। তবে এখনও সময় আছে, তাই আসুন, আমরা সেই ভুলটাকে শোধরে নিয়ে আবারও আমাদের প্রিয় দেশটির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক উন্নয়নে আত্মনিবেদন করি। অন্যথায় ভবিষ্যৎই হয়ত বলে দেবে পরিস্থিতি কী হবে।’
রিজভী আরও বলেন,‘সাতদিন আগেই ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স সারাদেশে ভোটকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে, অথচ আগের দৃষ্টান্ত হলো- নির্বাচনের আগের দিন এগুলো পাঠানো হতো। ভোট জালিয়াতির আয়োজন করার জন্যই সাতদিন আগে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে, যা দূরভিসন্ধিমূলক।’
কেএইচ/জেডএ/এমএস