পিইসি-জেএসসি পরীক্ষার বিলুপ্তি চায় গণসংহতি আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করাসহ দুটি লক্ষ্যে ৭৪টি উপধারায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে গণসংহতি আন্দোলন।

শনিবার গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার তুলে ধরেন দলটির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান নেতা জোনায়েদ সাকিসহ তাসলিমা আক্তার, ফিরোজ আহমেদ, আবু বক্কর রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা চাই শিশুদের মেধার বিকাশ। কিন্তু পিইসি ও জেএসসির মত পরীক্ষা শিশুদের ওপর চাপিয়ে দেয়ায় তাদের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে পিএসসি ভীষণ রকম অপ্রয়োজনীয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ন্যায্য দাবি উত্থাপনের জন্য শক্তির দরকার হয় না, যে কেউ ন্যায্য দাবি উত্থাপন করতে পারেন। আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কীভাবে দেখতে চাই আজ সেটাই জাতির সামনে তুলে ধরেছি।

এ সময় ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর হামলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িতে হামলা করা হয়। এতে এটাই স্পষ্ট দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই।

এর আগে ইশতেহার ঘোষণার শুরুতে আবুল হাসান রুবেল বলেন, বাংলাদেশ আজ একটা সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকের কথা বলার, অধিকার প্রয়োগ করার প্রধানতম হাতিয়ার হলো ভোট। বাংলাদেশের মানুষ বহু বছর ধরে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে একদিকে দেশবাসীর মুখ বন্ধ, হাত-পা বাঁধা। সর্বোপরি আতঙ্ক আর গুম-খুন নির্যাতনের মাধ্যমে একটা ত্রাসের রাজত্ব। সামনের নির্বাচন তাই বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বারবার প্রমাণিত হয়েছে দেশের মানুষ যদি জেগে ওঠে কোনো চক্রান্তকারী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, স্বৈরশাসক, গুণ্ডাতন্ত্র, বিদেশি শক্তি -এ দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আমরা তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই ৩০ ডিসেম্বর সারাদিন ভোট কেন্দ্রে থাকুন। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন এবং অধিকার রক্ষার জন্য ফলাফল ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র পাহারা দিন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রতীক কোদাল মার্কা নিয়ে এবার ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুটি সুস্পষ্ট ঘোষণা ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। লক্ষ্য দুটি হলো- (এক) ভয় মুক্ত বাংলাদেশ : কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য এবং (দুই) সবার জন্য উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

ইশতেহার ঘোষণার শেষ পর্যায়ে এসে আবুল হাসান রুবেল বলেন, বাংলাদেশ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল এক সত্যিকার গণযুদ্ধ। যেখানে অংশ নিয়েছেন দেশের কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র, আপামর জনসাধারণ। এটা কোনো দলের সম্পদ নয়, হতে পারে না। এ লড়াই ছিল বাংলাদেশের জনগণের লড়াই। তারা এর উত্তরাধিকার বহন করেন। একটা ন্যায়ভিত্তিক মর্যাদাসম্পন্ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তার বিপরীতে রাষ্ট্রপরিচালনার ফলে আজ ভয়ের রাজত্ব তৈরি হয়েছে।

এমএএস/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।