ইসি নয়, সরকারের কথায় চলছে পুলিশ : মওদুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) দাবি করেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পুলিশ এখন তাদের কথায় চলবে। কিন্তু বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি, পুলিশ সক্রিয়ভাবে এখনও সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে। তবে জনগণ ভোট কেন্দ্রে আসলে এই সরকারের অবশ্যই পতন হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আদর্শ নাগরিক আন্দোলন ও জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে 'গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ' শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মওদুদ বলেন, ভোটাররা যদি কেন্দ্রে আসেন, তবে এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ। ঐক্যফ্রন্টের জন্য, বিএনপির জন্য, জোটের জন্য এবং সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি একটি বিরাট এবং শেষ সুযোগ। আর কোনোদিন এ ধরনের সুযোগ আসবে কি-না আমি বলতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। দলীয় সরকারে থেকে কোনো ইসির জন্য নিরপেক্ষ কাজ করা সম্ভব নয়। দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসন কারো পক্ষেই নিরপেক্ষভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। সে ভবিষ্যৎবাণী আজকে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে পুলিশ এখন আমাদের কথায় চলবে। কিন্তু বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি পুলিশ সক্রিয়ভাবে এখনও সরকারি দলের কাজ করছে।

সিভিল প্রশাসন রিটার্নিং অফিসার তিনি একজন জেলা প্রশাসক। নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঠিকই, কিন্তু তিনি তো নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা না। তিনি সরকারের কর্মকর্তা। তার সাধ্য নাই রিটার্নিং অফিসার হিসেবে সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া। আমি তাকে দোষ দিচ্ছে না। কারণ তিনি জানেন, তার প্রমোশন, পোষ্টিং সব নির্ভর করছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাতে। ইসি মুখে যত কথাই বলছেন তার একটা কথাও বিশ্বাস করবেন না। মুখে এক কথা, মনের মধ্যে অন্য কিছু। তারা জানে তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, তাদের কোনো কথা পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন শোনে না। 

তিনি আরও বলেন, আমার ভোট আমি দেব, লড়াই করে ভোট দেব। এখন অবস্থাটা ওই পর্যায়ে এসেছে। এটাই আমাদের শেষ ভোট বাংলাদেশের নামে, বাংলাদেশের অস্তিত্ব, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বিচার বিভাগ ও গণ মাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য। সুস্থ ও সভ্য সমাজ গঠনের জন্য একমাত্র পথ হলো এই ভোট। 

মওদুদ বলেন, গত দুই দিনে বিএনপির তিনজন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীতে গ্রেফতার আরও বাড়বে, গায়েবি মামলা চলতেই থাকবে। গতকাল আমার এলাকায় শুনলাম চারটে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসেছে ট্রাকে করে। তারা বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। যাতে কোনো বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থক বাড়িতে থাকতে না পারে। আর থাকলেও গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। তবে এই সরকার জানে, তারা যতই কলা-কৌশল করুক আর যতই নীল নকশা ও পরিকল্পনা করুক না কেন, মাঠ পর্যায়ে তাদের ভোট নাই।

জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, শাহাবাগ থানা কৃষকদলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম সহ প্রমুখ।

জেইউ/এমএমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।