পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন সিইসি : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৫ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৮

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করানোর জন্য তার ভাগ্নে এস এম শাহজাদা সাজুকে পটুয়াখালী-৩ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কাজেই তিনি (সিইসি) স্বীয় পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তার পক্ষে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।’

সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব ড. শাহ মোহাম্মদ ফরিদ স্বেচ্ছায় মূখ্য সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন- যাতে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন কোনোভাবেই উঠতে না পারে। কারণ সেই নির্বাচনে তার ভাই বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। যদিও তিনি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন না। তবু তিনি পদত্যাগ করে এক অসাধারণ নজির স্থাপন করেছিলেন। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেই দায়-দায়িত্ব থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেন। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি যে, ভাগ্নের মনোনয়নের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি অনুরূপ উচ্চ নৈতিকতা প্রদর্শন করে অবিলম্বে স্বীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষায় কথা বলে আসছেন ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন। দ্রুত দলবাজ ইসি সচিবকে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। কারণ আওয়ামী লীগ নেতারদের বক্তব্যের সাথে সুর মিলিয়ে বিরামহীন রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। একতরফা ও নীলনকশার পাতানো নির্বাচনের মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন ইসি সচিব।

তিনি আরও বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে ভোটারবিহীন আরেকটি নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে নির্বাচন কমিশনে হেলাল উদ্দীনকে নিয়োগ দিয়েছে। ইসি সচিব মূলত নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করছে। কমিশনারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে তোড়জোড় চালাচ্ছেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘বিগত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের রূপকার ইসির তৎকালীন সচিব বর্তমান পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের পরামর্শে নির্বাচন কমিশনকে পরিচালনা করেন হেলাল উদ্দীন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার প্রসংশামূলক পোস্ট দেয়া আছে। এসবের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তিনি নিরপেক্ষ নন, চরম দলবাজ এবং আওয়ামী লীগের অন্ধ অনুসারী।’

বিএনপির এই নোতা বলেন, আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি যে, ফেনীসহ কিছু কিছু জেলার পুলিশ সুপারগণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) ডেকে নিয়ে সভা করে তাদেরকে সরকারের পক্ষে কাজ করার চাপ দিচ্ছেন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানির বিষয়ে ব্রিফ করছেন। তারা বলছেন- এসিআর আমাদের হাতে, নির্বাচনের রেজাল্ট আমাদের হাতে দেবেন, এসিআর নিয়ে যাবেন। ইতোমধ্যে আমরা ফেনীসহ অন্যান্য জেলার বেশ কিছু পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে পত্রের মাধ্যমে অবহিত করেছি।

তিনি বলেন, আমরা এবস পুলিশ সুপারদের উদ্দেশে বলতে চাই- প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে আপনারা এ ধরনের অনৈতিক ও অযাচিত প্রভাব বিস্তার হতে এখনই নিবৃত্ত হোন। অন্যথায় আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আইনানুগ অভিযোগ/মামলা দায়ের করতে বাধ্য হব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম সচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।