‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ধানের শীষ চাইবো’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হচ্ছে রোববার থেকে। দলটির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সকাল ৯টা ১ মিনিটে পঞ্চগড়-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ ইউনুসের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
শেখ ইউনুস জাগো নিউজকে বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করি। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ধানের শীষে মনোনয়ন চাইবো।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি পাই বা না পাই দলের কাছে চাইতে তো পারি। দল যেটা সিদ্ধান্ত নেবে, স্ট্যান্ডিং কমিটি যেটা ভালো মনে করবে সেটাই হবে। আমি চাইবো আমাকে ধানের শীষ দেয়া হোক।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। যারা দলের মনোনয়ন চাইছে তাদের মধ্যে আমি রাজনীতিতে সিনিয়র। দল যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই মেনে নেব। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশের গণতন্ত্রের জন্য যেটা প্রয়োজন দল যেটা মনে করবে মাথা পেতে নেব।
অপর প্রশ্নের জবাবে শেখ ইউনুস বলেন, ‘আমার দলের যারা সমর্থক রয়েছে বা আমার যারা শুভাকাঙ্খী রয়েছে তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে না। আমার শুভাকাঙ্খীদের কথা হলো-ভাই আপনি চেষ্টা করেন, আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করছি। ধানের শীষে যে পাবে তারা সবাই ধানের শীষের জন্য কাজ করবে। আমাকে যদি ধানের শীষ না দেয়া হয় তাহলে আমিও ধানের শীষের জন্য কাজ করবো। দল যদি মনে করে আমার চেয়ে বেটার প্রার্থী আছে, তাহলেও আমি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না। দলের তৃণমূল কর্মী হিসেবে আমি বাইরে যাব না।
আরও পড়ুন>> চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ধানের শীষে লড়তে চান ১০৩ নেতা
তিনি বলেন, আমি মনে করি সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে এমন বিবেচনায়ই দল সিদ্ধান্ত নেবে। আজকে দশ বছর ধরে আমরা বিএনপি বিরোধী দলে আছি। মাঝখানে একটা নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনে আমরা যাইনি। এ কারণে আমি মনে করি যার জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা আছে দল সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেবে।
এ পর্যন্ত ৪৫৮০টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। জমাদান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ১৮ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ এবং বেলা আড়াইটা থেকে রাজশাহী বিভাগের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হবে।
এ ছাড়া ১৯ নভেম্বর (সোমবার) বরিশাল বিভাগ, সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা এবং খুলনা বিভাগ, বেলা আড়াইটা থেকে। ২০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম বিভাগ, সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা, কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগ, বেলা আড়াইটা থেকে।
২১ নভেম্বর ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ, সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা এবং ঢাকা বিভাগ, বেলা আড়াইটা থেকে শুরু হবে।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, বিগত ৫ বছরের জরিপের তথ্য রয়েছে। মোটামুটি নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো আবার ক্রস-চেক করে মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি।
মওদুদ বলেন, প্রার্থী নির্বাচনে আমাদের অনেকগুলো
মানদণ্ড রয়েছে। প্রধান বিষয় হলো- দলের জন্য তার অবদানটা কি সেটা আমরা দেখবো, আর গত ১০ বছরে যে সংগ্রাম হলো, আন্দোলন হলো সেই আন্দোলন তার ভূমিকা কি ছিল সেটাও দেখবো। তার আর্থিক স্বচ্ছলতা আমরা বিবেচনা করব। তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের সংগঠনের ব্যক্তিদের মতামত নেব।
তিনি বলেন, অনেক এলাকা আছে যেখানে মানুষ বিএনপি করেন না কিন্তু বিজ্ঞ, শিক্ষিত যারা তাদের মতামত নেয়ার চেষ্টা করি। তারপর দেখি প্রার্থী জিতবে কিনা। এটা একটা বড় মাপকাঠি। হয়তো একটা প্রার্থীর সবকিছু আছে কিন্তু সে ভোট পাবে না অথবা নির্বাচনে জিতবে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে ৯৫ শতাংশ জায়গায় যেসব মাপকাঠির কথা বললাম সেগুলো বিবেচনায় আনা হবে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। যখন আমরা প্রার্থীদেরকে ডাকবো তখন বিগত ৫ বছরের জরিপের এসব তথ্যগুলো আমাদের সামনে থাকবে।
মওদুদ আরো বলেন, সবাই যে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়ন কেনেন তা নয়, অনেকে আছেন যারা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কেনেন।
কেএইচ/এমআরএম