নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানোর পক্ষে নয় আ.লীগ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানো যাবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের কো-চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পরিষ্কার বলেছি, ৩০ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়েছেন। আর নয়। একদিনও নয়, একঘণ্টাও নয়।
বুধবার সন্ধ্যায় ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি করে ঐক্যফ্রন্ট।
ঐক্যফ্রন্টের এই দাবি হাস্যকর উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যারা বিদেশিদের সুযোগ-সুবিধার কথা ভেবে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে। আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেখব।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি নির্বাচনের পেছানোর জন্য কয়েকটি মহল বিভিন্নভাবে কথা বলছেন। কিন্তু নির্বাচন পেছালে কী অসুবিধা হবে তা ভেবে দেখছেন না তারা। এর আগেও ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়েছে, সে সময় কিন্তু বড় দিন কিংবা ইংরেজি নতুন বছর কোনো সমস্যা হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হলে কেউ যে আসবেন না তেমন কোনো বিষয় নয়।
'ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হলে ১ জানুয়ারি কয়েক লাখ নতুন ভোটার হবে। তারা যদি নিবন্ধিত না হন, তাহলে আদালতে রিট করলে নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যাবে। এটার দায়দায়িত্ব কে নেবে? এ ছাড়া বছরের প্রথমে স্কুলে নতুন বই বিতরণ করা হয়। সেখানেও সমস্যা দেখা দেবে-', যোগ করেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের কো-চেয়ারম্যান।
ঢাকার নয়াপন্টনে বুধবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংগর্ষ ও গাড়িতে আগুনের বিষয়ে বলেন, এটি নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা আজজের সন্ত্রাসী ঘটনাক শাস্তিযুক্ত অপরাধ মনে করি। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট যেভাবে আগুন, সন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, এটি তারই আলামত কি না।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জনের প্রাণ গেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এটা কিন্তু নির্বাচনের আগে। সেটা নির্বাচনের ব্যাপারে নয়, গাড়ি চলাচলের ব্যাপারে। দুটি গাড়ি প্রতিযোগিতা করে চলতে গিয়ে দুজনকে চাপা দেয়, এতে তারা মারা গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে থেকে শেখ হাসিনার যে ‘নির্বাচনী প্রচারণা’ সেটি আইনের লঙ্ঘন কি না– সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, সেখানে শেখ হাসিনা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন না। যারা দলীয় মনোনয়ন নিয়েছেন তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দোয়া নিতে গিয়েছেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন রশিদুল আলম, দীপু মনি, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মশিউর রহমান, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, বিপ্লব বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, পুনঃনির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর।
এইচএস/জেডএ/এমএস