নির্বাচন পিছিয়ে দিলে আইনের ব্যত্যয় হতো না : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৮

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধান না হওয়ার আগেই আকস্মিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত। সকল বিরোধী দলের দাবি ছিল মাঠ সমতল এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করে তফসিল ঘোষণা করার। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময়ও ছিল কমিশনের হাতে। নির্বাচন পিছিয়ে দিলে আইনের কোনো ব্যত্যয়ও হতো না।

শুক্রবার (৯ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের মতামতকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র সরকারের নির্দেশে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে কমিশন। নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে কিছুই নেই। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। চারদিকে শুধু আতঙ্ক আর ভয়।

তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে যাবেন না বলে প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী ও মহাজোটের নেতারা মুখস্থ কথাই আওড়িয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নিজেরাই একের পর এক সংবিধান লঙ্ঘন করছেন। মন্ত্রী ও অন্যান্য সাংবিধানিক পদধারীরা পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা কার্যকর হয়নি।

রিজভী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক আওয়ামী কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি দণ্ডিত হলেও তাদের মন্ত্রিত্ব ও এমপিত্ব বজায় থাকে। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে সুচিকিৎসার অধিকারকেও কেড়ে নেয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার নিজ উদ্দেশ্য সাধনে বেগম খালেদা জিয়ার ওপর নিষ্ঠুর-অমানবিক আচরণের মাত্রা দিনকে দিন বৃদ্ধি করছে। চিকিৎসা শুরু না হতেই তড়িঘড়ি করে তাকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সরকারের প্রতিহিংসায় বেগম জিয়ার জীবন চরম নিরাপত্তাহীনতায়। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

রিজভী বলেন, রাজশাহীতে আজ (শুক্রবার) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী ও আশপাশের জেলায় চলছে গ্রেফতার অভিযান। নেতাকর্মীরা যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সে জন্য শহরে ঢোকার বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। বৃহত্তর রাজশাহী জেলায় পরিবহন ধর্মঘট করানো হয়েছে সুপরিকিল্পতভাবে।

তিনি বলেন, গতকাল সিইসি বলেছেন, নির্বাচনের ভূমি সমতল থাকবে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি, সমাবেশে বাধা প্রদানকে কি সমতল ভূমি বলে? মূলত রাজনৈতিক ময়দান সম্পূর্ণভাবে সরকারের অনুকূলে সমতল রাখার যাবতীয় বন্দোবস্ত করছে নির্বাচন কমিশন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, সময় অত্যাসন্ন, যে কারাগার অন্যের জন্য তৈরি করা হয় সেই কারাগারে নিজেদেরকে ঢুকতে হয়, এটাকেই বলে প্রকৃতির প্রতিশোধ। নিজের খোঁড়া গর্তে নিজেদেরকেই পড়তে হয়, এ বিষয়টি ভাবার জন্যও ক্ষমতাসীনদের অনুরোধ করছি।

খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দিয়ে দেশের সঙ্কট সমাধানের অনুরোধ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি মেনে নিতে বলেন রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ও প্রচারে সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করুন।

কেএইচ/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।