সংলাপকে ‘রঙ-তামাশা’ বললেন মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ০৩ নভেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ চলছে তাকে ‘রঙ-তামাশা’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।

শনিবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাটির ডাক সংগঠন আয়োজিত ‘নির্বাচন ভাবনা ও জন প্রত্যাশা’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের’ সঙ্গে সংলাপে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের দিন নির্ধারণের পর বিকল্পধারা সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন।

এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান প্রধানমন্ত্রী সংলাপের বিষয়ে আন্তরিক এবং সব দলের সঙ্গে সংলাপ করতে চান। এরপর থেকে একের পর এক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের তারিখ নির্ধারণ হয়।

মান্না বলেন, ‘জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতেই সরকার একের পর এক দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন। সংলাপকে কিভাবে ফালতু করা যায়, ছোট করা যায়, সে জন্য একটার পর এটা দলকে ডেকে আনছেন। সংলাপের নামে রঙ-তামাশা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না সাত দফার সমাধান হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা যাবে না। উত্তরে তারা বলেন- আপনারা যখনই বলবেন তখনই বসা হবে। ওহ আমরা চাইবো আর আপনারা চাইবেন না? এখন বলছেন ৮ নভেম্বর পর্যন্ত সংলাপ করবেন। এটা কি সংলাপ নাকি তামাশা।’

আওয়ামী লীগের এক সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মান্না বলেন, ‘সিলেট ও চট্টগ্রামের জনসভায় দেখেছি অত্যাচারের কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ রকম সময়ে সংলাপ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোনো সংবিধান আছে যেখানে হাত দেয়া যাবে না। বরং সংবিধান জিনিসটাই হচ্ছে এমন, যেটা প্রতিনিয়তই সংশোধন হয়। আরও বেশি উন্নত হয়।’

মান্না বলেন, ‘গণভবনে সংলাপ করেছেন যেখানে সাংবাদিক ছিল না। সেই ছবি তো বাইরে যাওয়ার কথা নয়। অথচ তারা সেই ছবিগুলো ফেসবুকে দিয়েছে। এদের মতলবই খারাপ। এটা একটা মতলবি সরকার। আমাদের আমন্ত্রণ দেয়া হয়েছে নৈশ্যভোজের। আমরা তো বলেছি নৈশ্যভোজের জন্য তো যাচ্ছি না। আমরা সংলাপ চাই।’

‘স্ন্যাক্সের সঙ্গে সুপের ছবি ফেসবুকে দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন তারা? এরা ছোট লোক। এ সরকার ছোট লোকের সরকার, না হলে এগুলো করতে পারে না। খাওয়ার ছবি দিয়ে বাইরে জনগণকে কি বুঝাতে চায়’ বলেন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম এ নেতা।

তিনি জানান, ‘সংসদ ভেঙে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন- সংবিধানের মধ্য থেকেই নির্বাচন করা যায়। শুধু তাই নয়, আমরা যে দাবিগুলো করেছিলাম, তার মধ্যে ৩-৪টা দাবি আছে যেগুলো সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কই নেই। এগুলো মেনে নিন। বলে দেন এখন থেকে কার্যকর হবে।’

টিভি টক শোতে সংলাপের নামে মিথ্যাচার হচ্ছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘এরশাদের সময় যদি নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যায়। পরে দুটি নির্বাচনে যদি তত্ত্বাবধায়কের জন্য নিরপেক্ষ লোক পাওয়া যায়। তবে এখন কেন পাওয়া যাবে না?’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মান্না বলেন, ‘আপনি আগে বলেন, নিরপেক্ষ লোক চান, আমরা প্রস্তাব করি। যদি পছন্দ না হয়, তাহলে প্রস্তাব দেন। কিন্তু আগে তো মানতে হবে? এ সরকার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে। তারা সংবিধান সম্মতভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। এটা জবর দখলকারী সরকার, স্বৈরাচারী সরকার।’

আন্দোলনের হুমকি দিয়ে মান্না বলেন, ‘আপনি মনে করছেন রাস্তায় আন্দোলন করবো, আর পুলিশ দিয়ে গুলি করে হত্যা করবেন। আমরা সে সুযোগই দেব না। এমন কায়দায় আন্দোলন করবো যখন আপনার বন্দুক ফুটবে না। যারা গুলি চালায় সেই লোকগুলো গুলি করবে না। এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হবে যখন আপনার কিছুই করার থাকবে না। যেভাবেই এগোন না কেন আপনার পতন অনিবার্য। আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’

এমএএস/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।