ড. কামাল সাহেবরা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও আমাকে দাওয়াত দেননি

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ২০ দলের পক্ষ থেকে বিএনপি প্রতিনিধিত্ব করছে। আলাদা করে যোগ দেয়ার কিছু নেই। আমরা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে আছি, থাকব। সরকার নানা চেষ্টা করেও ২০ দলে ফাটল ধরাতে পারেনি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা থামাতে গিয়েও সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে ঐক্যফ্রন্ট এখন পরিবর্তনের রাজনীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বলছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিজেপি স্বতন্ত্রভাবে যোগ দেবে কিনা- জানতে চাওয়া হয় পার্থের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আমরা ২০ দলীয় জোটে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপি সেখানে ২০ দলের প্রতিনিধিত্ব করছে। আমরা ২০ দলে আছি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মঞ্চে এখনও দেখা যায়নি আপনাকে- জবাবে তিনি বলেন, ‘ড. কামাল সাহেবরা ডাকলেই যাব। তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে দাওয়াত দেননি। ২০ দলের পক্ষ থেকে তো বিএনপি নেতারা মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য রাখছেন। তারা আমাদের হয়েই কথা বলছেন।’

আরও পড়ুন : বিকল্পধারায় যোগ দিলেন শমসের মবিন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অগ্রযাত্রা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে আন্দালিব রহমান পার্থ আরও বলেন, ‘সরকার নানাভাবে ঐক্যপ্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চাইছিল। ব্যর্থ হয়েছে। সঠিক পথ ধরেই ঐক্যফ্রন্ট এগিয়ে যাচ্ছে।’

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের বোঝাপড়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তরুণ এই নেতা বলেন, “জামায়াত প্রসঙ্গে বোঝাপড়া বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের। ঐক্যফ্রন্টের পথচলায় ‘জামায়াত’ আলোচনা চাপা পড়ে গেছে। ২০ দলে জামায়াত আছে। জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা হবে বিএনপির। আর বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের।’

আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দুঃশাসনকে কখনই মেনে নেয়নি। সরকারের পতন এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আমরা এলাকায় নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আন্দোলনের জন্যও প্রস্তুত রয়েছি। দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের পক্ষে অবস্থান নেয়াও এখন আন্দোলনের অংশ।’

আরও পড়ুন : বি.চৌধুরী মান্নান মাহীকে বিকল্প ধারা থেকে বহিষ্কার

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ গঠিত হয়। ওই দিনের সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোক্তা কামাল হোসেনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

ওইদিন পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিকেলে কামালের বাড়ি গিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে বি চৌধুরীর বাড়িতে আলাদা সংবাদ সম্মেলন থেকে ঐক্য প্রক্রিয়া বিনষ্টের জন্য দায়ী করা হয় প্রেস ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনকারীদের। বিকল্প ধারার পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপি জামায়াত ছাড়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে শুধু তাদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য তাদের সঙ্গে ঐক্য গড়বে না বি চৌধুরীর দল।

দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পাশাপাশি বি চৌধুরী যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের কামালও নির্বাচন বর্জন করেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং ইসি পুনর্গঠনের পাঁচ দফা দাবিতে একসঙ্গে আন্দোলন চালাতে একমত হন বি চৌধুরী ও কামাল।

আরও পড়ুন : ড. কামালের সঙ্গে চলতে চান কাদের সিদ্দিকী

গত ১৫ সেপ্টেম্বর একযোগে আন্দোলনের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাবেক এই দুই নেতা। এরপর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কয়েকটি কর্মসূচিও একসঙ্গে পালন করেন তারা।

বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেয়ার বিষয়টি সামনে এলে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। জামায়াত ছেড়ে আসার শর্ত বিএনপিকে দেয় বি চৌধুরীর দল বিকল্প ধারা। কিন্তু জামায়াত নিয়ে বিএনপির কোনো স্পষ্ট বক্তব্য না আসায় ফাটল ধরে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায়।

এএসএস/এমআরএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।