মইনুলের গ্রেফতার ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

মানহানি মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের গ্রেফতার ‘নজিরবিহীন’ মন্তব্য করে তার মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) মানহানি মামলায় দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে সরকার। মানহানি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে ব্যাহত করতেই এ গ্রেফতার।

মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

ব্যারিস্টার মইনুল জামিনে ছিলেন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একজন ব্যক্তি। শুধুমাত্র অপশাসনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলাটাকেই অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘রাতে কোর্ট বসিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সকলের কাছে পরিষ্কার। গতকাল প্রধানমন্ত্রী যখন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মইনুল হোসেন একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা করেন, বাকিটা আমরা দেখছি। এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলো, তাকে গ্রেফতার করা হলো।’

রিজভীর ভাষ্য, মানহানি মামলায় প্রথমেই গ্রেফতারি পরোয়ানার নজির নেই। এ ধরনের মামলায় প্রথমে সমন জারি করে আসামিপক্ষের বক্তব্য নেয়া হয়। আসামিপক্ষ উপস্থিত না হলে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি।

এ সময় তিনি দলের পক্ষ থেকে মইনুল হোসেনের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন।

‘দেশে সময়মতো নির্বাচন হবে। বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ বহাল থাকবে। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলার ক্ষমতা আওয়ামী লীগ ও সরকারের আছে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইতিহাসই হলো ভোট ডাকাতির নির্বাচন, ভোটারবিহীন নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে পরিষ্কার তিনি সুষ্ঠু ও সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান না, গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চান। জোর করে ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চান।’

রিজজী মনে করেন, এ সরকারের আমলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, হবেও না। তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আরেকটি একতরফা নির্বাচন হবে না, এদেশের মানুষ হতে দেবে না। সিটি নির্বাচনের স্টাইলে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

বিএনপি মুখপাত্রের অভিযোগ, জনগণের দাবি ও আন্দোলনকেই তিনি (শেখ হাসিনা) ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সেজন্য সরকার প্রধান তার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এখন পুলিশি শক্তির ওপরই ভরসা করছেন।’

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে চূড়ান্ত ক্র্যাকডাউন শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। এ যেন বাতি নিভে যাওয়ার আগে হঠাৎ জ্বলে ওঠা। গুপ্তহত্যা, বিচারবর্হিভূত হত্যা, গুম, খুন, বিরোধী মত দলন-নিপীড়নের সঙ্গে দেশজুড়ে চলা গণগ্রেফতারের গতি এখন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘সারাদেশটাকে ভুতুরে বাড়িতে পরিণত করা হয়েছে। মরদেহের পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। কিন্তু মানুষ আর তো বেশি দিন চুপ করে বসে থেকে শুধু আহাজারি করবে না। মৃত্যুভয় জয় করে গণতন্ত্রের নির্ভয় সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে সকল শক্তি নিয়োগ করবে। বর্তমান দুঃশাসনের অবসান সময়ের ব্যাপার মাত্র।’

কেএইচ/এসআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।