ছোট হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৩ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০১৮

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে। আগামী ১৫-২০ দিন পর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তাই খুব অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে।

রোববার রাজধানীর সোবহানবাগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা : দেশের সার্বিক উন্নয়নের অনুঘটক’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা মানেই ক্যাম্পেইন শুরু। শিগগিরই মন্ত্রিসভার কর্মের ধরন পাল্টে যাবে, তারা কেবিনেটের রুটিনওয়ার্ক করবেন। মন্ত্রিসভার আকার ছোট হলে সেখানে আমিও থাকব কি না তা প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ জানেন না। কারা সেই মন্ত্রিসভায় থাকছেন এটা প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ বলতেও পারবেন না। তবে সরকার এই সরকারই থাকবে। মন্ত্রিসভায় কারা কারা থাকছেন, সেটা প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ইঙ্গিত পেয়েছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ অনুমতি দিয়েছে। অফিসিয়াল চিঠি না পাওয়ার আগ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট নেতারা অহেতুক নাটক করবেন, এটা তাদের পুরনো অভ্যাস।

তিনি বলেন, সিলেটে বড় বড় নেতা যাবেন, নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ একটু খতিয়ে দেখবে। অলরেডি পুলিশ তাদের অনুমতি দিয়েছে। আমার তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি আমাকে বলেছেন যে, সভা-সমাবেশ যেখানেই করতে চান, এ ব্যাপারে কোনো বাধা-নিষেধ থাকবে না, থাকার কথাও নয়।

ঐক্যফ্রন্ট সিলেটে সমাবেশের জন্য আদৌ অনুমতি পাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখুন, অনুমতি নিয়ে নাটক করা এটা তাদের পুরনো অভ্যাস। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি অনুমতি পেয়েছে, কিন্তু এটা নিয়ে নাটক করতে তারা দ্বিধা করেনি। আমি এখানেও বলছি, এটা তাদের পুরনো অভ্যাস। তারা অনুমতি নিয়ে নাটক করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন, নির্বাচন কমিশন বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কি ভুলে গেছেন যে, নির্বাচন কমিশন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট? প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আরও চারজন কমিশনার আছেন।

তিনি আরও বলেন, একজন কমিশনার কোনো ইস্যুতে যদি ভিন্নমত পোষণ করেন অথবা নোট অব ডিসেন্ট দেন, এটা তো গণতন্ত্রের বিউটি। সেখানেও ইন্টারনাল ডেমোক্রেসি কাজ করছে, সেটাই আমরা মনে করব। এটাকে নিয়ে বিভক্তির যে অভিযোগ তিনি (মির্জা ফখরুল) তুলেছেন, এটা সম্পূর্ণই কাল্পনিক ও হাস্যকর ব্যাপার।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাজধানীর যানজট কমিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে সরকারের করণীয় নিয়ে মন্তব্য করার সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আজই পার্লামেন্টের শেষ অধিবেশন শুরু হবে। এখন এসে আমি কী করব? আর ১৫-২০ দিন পরেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। এরপরে নির্বাচনী ব্যস্ততা, ক্যাম্পেইন শুরু হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি যদি থাকিও নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর মেজর কোনো পলিসির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। আমাদের কাজ সীমিত হয়ে যাবে। আমরা রুটিন কাজ করব। ইচ্ছে করলেই বড় কোনো প্রজেক্ট উদ্বোধন অথবা নির্মাণ কাজ শুরুর উদ্বোধন করতে পারব না। এসব বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে। কাজেই এখন কোনো কিছুই করতে পারব না।

মন্ত্রী বলেন, যানজট নিরসন হবে কীভাবে, ভিআইপিরা সড়কে উল্টো পথে চলেন। তাহলে সাধারণ মানুষ আইন মানতে চাইবে কেন? ফুটপাত চলে গেছে বেদখলে। পথচারীদের দখলে নেই। সচেতনতার বড় অভাব। সড়কে ডিভাইডারের ওপর দিয়ে লাফিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হয়, তবু ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চায় না।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপর করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব খন্দকার রাকিবুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ পিএসসি।

স্বাগত বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব-উল-হক মজুমদার এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক, পরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল হক প্রমুখ।

এদিকে রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ৩৭তম সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর তফসিল নিয়ে বৈঠক করবে ইসি। বৈঠকের পর তফসিলের দিন-তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের দিনক্ষণ নির্ধারণ করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জাগো নিউজকে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে সাক্ষাতের জন্য ইসি সময় চেয়েছিল। ওইদিন বিকেল ৪টায় সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।

এমএইচএম/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।