হাসপাতালে খালেদার দেখা পাবেন কি-না সন্দেহ মওদুদের
হাসপাতালে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘আজ শনিবার বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরই বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনা হবে। আমরা হাসপাতালে যাব। জানি না আমাদের যেতে দেবে কি-না। তবে আমরা সেখানে থাকার জন্য চেষ্টা করব।’
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত ‘নাগরিক প্রতিবাদ সভা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে, সুপরিকল্পিতভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করছে। তারা যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চায় না, সেটা তারা এরই মধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সকলেই প্রত্যাশা করেছিল, দেশে নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু সরকার অতি হীন একটি নীতি গ্রহণ করেছে। সেটি হলো বিএনপিকে কীভাবে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায়।’
সরকার ইতোমধ্যে দুটি কাজ করেছে, যাতে দেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হয় এমন মন্তব্য করে মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘এর একটি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এর মাধ্যমে সরকার সংবাদমাধ্যমকে সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ করে দেয়ার একটি আইন করেছে। আইনে পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, সেটা রক্ষীবাহিনীর সময় ছিল না। এর চেয়ে জঘন্যতম কালো আইন আর হতে পারে না।’
‘আর একটি কাজ করেছে, সেটি হলো গায়েবি মামলা। কোনো ঘটনা ঘটে নাই, কিন্তু মামলা দিয়ে দিয়েছে। আমাদের এত বছরের রাজনীতির জীবনে কোনোদিন শুনিনি এমন মামলা হতে পারে। পাকিস্তান আমলে শুনিনি, বাংলাদেশ হওয়ার ৪৭ বছরেও কোনোদিন শুনিনি- এ ধরনের মামলা হতে পারে। এটা ফৌজদারি মামলা। অসংখ্য মামলা দিয়ে আমাদের আসামি করা হচ্ছে’, যোগ করেন মওদুদ।
বাংলাদেশে একদলীয়ভাবে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না জানিয়ে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যতই আপনারা (আওয়ামী লীগ) কলাকৌশল করেন, বাংলাদেশে এবার একদলীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। সারাদেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতার ভাষ্য, আজকে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, এই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে এবং সংলাপে আসতে বাধ্য করা হবে। সেই সঙ্গে, সরকারকে বাধ্য করা হবে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। এখানে সংবিধান কোনো বাধা হবে না।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে এবং এম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ।
এমএএস/এসআর/জেআইএম