আন্দোলন রুখতে গোরস্থানে পুলিশ মোতায়েনের পরামর্শ নজরুলের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সরকারের উচিত গোরস্থানে পুলিশ মোতায়েন করা! যদি মৃতরা এসে ঝামেলা করে সেটাকে প্রতিহিত করবে কে? আগস্টে মারা গেছেন যিনি, তিনি নাকি সেপ্টেম্বরে পুলিশকে আক্রমণ করেছেন। যারা জীবিত আছে তারাই শুধু এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে না, যারা মারা গেছেন তারাও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন!’

তিনি বলেন, ‘আবার আমরা যখন মিটিং মিছিল করি, পুলিশ দেয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় যাতে করে কোনো ঝামেলা না হয়। এখন দেখা যাচ্ছে গোরস্থানে পুলিশ মোতায়েন করা দরকার, যদি তারা এসে ঝামেলা করে।’

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

নজরুল বলেন, ‘গত কয়েক দিনে কয়েক হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। কি অদ্ভুত একটি দেশ, এই দেশের জন্যই কি মুক্তিযুদ্ধ করলাম। পত্রিকায় এসেছে পরিবেশ দূষণে মৃত্যুর হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ এই দেশে। কিন্তু এই হিসাব কেউ করে নাই, যে রাজনৈতিক দূষণে বিশ্বে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। এই দূষণে মারা গেছে গত কয়েকবছরে কয়েক হাজার মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনেই হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে, লাখ লাখ আসামি করা হয়েছে। আমাদের মিটিংয়ের অনুমতি দেয়া হয়, আমাদের কর্মীরা আসার সময় গ্রেফতার হন কিংবা যাওয়ার সময় গ্রেফতার হন। মিটিংয়ে আসলে তাদের ফিরে যাওয়ার উপায় থাকে না।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নিউইয়র্ক যাওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, হাছান মাহমুদ সাহেব মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা কথা বার্তা বলেন। যার কারণে তাদের দলের নেত্রী সাজেদা চৌধুরীও প্রকাশ্যে মিটিংয়ে বলেছিলেন- দেশের মধ্যে বহু বেয়াদপ দেখেছি, এ রকম দেখি নাই।’

নজরুল বলেন, ‘হাছান মাহমুদ বলেছিলেন যে ফখরুল ইসলাম সাহেব জাতিসংঘে কারও দাওয়াতে যাননি, এটা মিথ্যাচার করা হয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতর। আমাদের এখানে যে সচিবালয় আছে এখানে কি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া, পাশ ছাড়া যেতে পারবেন? মির্জা ফখরুল যে এখন থেকে নিউইয়র্ক গেলেন, সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রতিনিধি তার সঙ্গে কথা বললেন কোনো দাওয়াত ছাড়া? এ রকম তো হয় না কখনও। এর আগে এক সহকারী মহাসচিব এসেছিলেন তারানকো। তার সঙ্গে দুই জোটের শীর্ষ নেতারা দেখা করেছেন।’

খালেদা জিয়াকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব সরকারের এমন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ আইন থেকে বলা হয়েছে, আপনি যখন জেলখানায় ঢুকেন তখন আপনার ওজন মাপা হয়। জেল থেকে বের হওয়ার সময় ওজন মেপে যদি কম পাওয়া যায় তাহলে আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দিতে পারবেন। অর্থাৎ যারা সরকারের হেফাজতে থাকবে, তাদের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা দেখার দায়িত্ব সরকারের।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া ক্রমান্বয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তিনি কোনো সাধারণ নাগরিক নন। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো তার চিকিৎসার ব্যবস্থা কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে করার জন্য।’

সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীরা যে ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে বুঝা গেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশে আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের জাতিসংঘের সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে দলটির এই ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব আমাদের দলের মহাসচিবকে আমন্ত্রিত জানিয়ে ছিলেন। এটাতে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে সে বিষয়ে মিথ্যা কথা জাতির কাছে উপস্থাপন করছেন যে জাতিসংঘের মহাসচিব তাকে (ফখরুলকে) ডাকেননি।

এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিএনপি'র নেতাকর্মীরা যে যখনই বিদেশে যায় তাকে এয়ারপোর্টে আপনারা আটকিয়ে দেন তাহলে মির্জা ফখরুলকে আটকিয়ে দেন নাই কেন? তার বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারটাও তো আপনারা জানতেন।

বাংলাদেশের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

কেএইচ/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।