সরকারের ইচ্ছায় ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
ফাইল ছবি

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত সরকারি মেডিকেল বোর্ডের কঠোর সমালোচনা করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘সরকারি দলের অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড কারাগারে দেশনেত্রীকে ২০ মিনিটে তথাকথিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিএসএমএমইউ-তে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নিয়ে যাওয়ার জন্যই সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড ‘ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিবেদন’ দিয়েছে, আর সেজন্যই বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরকে বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমি দলের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের এই একগুঁয়েমি ও প্রতিহিংসা পরায়ণতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মেডিকেল বোর্ডে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত করে বেসরকারি কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।’

সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম সচিব বলেন, ‘গতকাল মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক শেষে হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের বলেছেন-বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়, কোনো আশঙ্কার কারণ নেই, তার সব ধরনের চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত বিএসএমএমইউ। পরিচালককে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন- বেগম জিয়ার পুরনো রোগগুলোই তারা পেয়েছেন, অন্য কিছু নয়। অর্থাৎ আমরা পূর্বেই বলেছিলাম- দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য নিয়ে সরকার দলের অনুগত বোর্ড সদস্যরা সরকারের পছন্দানুযায়ী পরামর্শ দেবেন-সেটিই প্রমাণিত হলো।’

রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য যদি ঝুঁকিপূর্ণ না হয় তাহলে অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি এপাশ ওপাশ হতে পারেন না কেন ? একথা তো মেডিকেল বোর্ডই স্বীকার করেছে। দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য স্ববিরোধী ও সরকারের চিন্তারই প্রতিফলন। ’

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে গঠিত সরকারি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ একদেশদর্শী ও সর্বজনীন চিকিৎসানীতির পরিপন্থী। একজন রোগীকে তার পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া উচিৎ, এটি তার মানবাধিকার, সেটি না করে কর্তৃপক্ষ জোর করে নিজেদের পছন্দের চিকিৎসকদের দিয়ে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো চরম প্রতিহিংসা পরায়ণ জেদেরই বহিঃপ্রকাশ।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার হরণের ছায়া পড়তে শুরু করেছে এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘একটা নির্জন বিরানভূমিতে সরকার একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করছে। কিন্তু এই ১৬ কোটির দেশের মানুষের আত্মশক্তিকে ভুলে গেছে সরকার। স্বৈরাচারকে বেশিদিন সহ্য করার ইতিহাস নেই এই দেশের মানুষের। এই দেশের পলিমাটির ধুলোয় জনগণের দ্রোহ ভাসছে। মামলা খেয়ে, গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীণ হওয়ার পরও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ঐক্যবদ্ধ-এটাই আমাদের ব্যতিক্রমী শক্তি। ’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতেই হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের জাতীয় নির্বাচন দিতেই হবে। আর সেই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। স্বৈরাচারের লৌহ কপাট আর বেশিদিন বন্ধ রাখা যাবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিই হচ্ছে গণতন্ত্রের শক্তি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন. সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।

কেএইচ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।