‘এটা রাজতন্ত্র না যে রাজা যা বলবে তাই হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাদা পোশাকে শিক্ষার্থীদের তুলে নেয়াসহ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের নিন্দা জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। যা হবে সংবিধান ও আইন মেনে গণতান্ত্রিক উপায়ে। এটা রাজতন্ত্র না যে রাজা যা বলবে তাই হবে।’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের পরিচয় না দিয়ে সাদা পোশাকে গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে তুলে নেয়ার বিষয় অস্বীকার করছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দও করছে না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানবিরোধী।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে দেশের আইনগুলোকে বাদ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ১২ শিক্ষার্থীকে ধরার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও কয়েকদিন পর তাদের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছে। এটা কোনো সরকারি বিধান হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ সময়ে বিশেষ কারণে একবার-দুইবার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণকে তুলে নেয়া এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু লোক আবার এদের মধ্যে গুম হয়ে যাচ্ছে। অনেককে তুলে নেয়ার পর তারা বাড়ি ফিরে আসে। তবে বাড়ি ফিরে আর কোনো কথা বলে না। তাদের এমন কথা বলা হয়, যাতে তারা কখনোই মুখ খুলে না। দেশেতো একটা সাংবিধানিক শাসন আছে, তাই না? এটাতো আর রাজতন্ত্র না যে রাজা যা বলবে তাই হবে।’

এই সংবিধান প্রনেতা বলেন, শিক্ষার্থীদের কেন রিমান্ডে নেয়া হলো, কেন অ্যারেস্ট করা হলো তা এখনও পরিষ্কার না। পত্রিকায় দেখলাম পুলিশ মৃত ব্যক্তিকে ককটেল ছুঁড়তে দেখেছে। মামলার বাদী নিজেও আসামিকে চেনেন না, অথচ আসামি কারাগারে।

তিনি বলেন, এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত। এগুলো সর্বোচ্চ আদালতের নজরে আনতে হবে। বোঝাতে হবে সরকার বেআইনিভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে। আমরা চাই নির্বাচন হোক। তবে নির্বাচনের জন্য যেই পরিস্থিতি থাকা প্রয়োজন বর্তমানে তার উল্টোটা হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িতদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের এভাবে ধরা হবে কেন? তারা তো সরকারকে সরানোর দাবি করেনি, কোটা বাতিল করতে বলেনি। তারা বলেছে কোটা সংস্কার করতে।

তিনি আরও বলেন, ৪৬ বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য কোটা দেয়া হয়েছিল, এখন এ বিষয়ে কিছুটা বিবেচনা করা উচিত। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া বাকি কোটাগুলো কেন সংস্কার করা হচ্ছে না?

এআর/এমএমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।