ঈদের আগেই খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি রিজভীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৩ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৮

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘অবৈধ সরকারের অন্যায় আর জুলুমের শিকার হয়ে বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে সকল অধিকার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি অসুস্থ দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। তার সুচিকিৎসার পাওয়ার অধিকারেও বাধা দেয়া হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘আইনের যথেচ্ছ অপপ্রয়োগের দ্বারা সরকার বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে উম্মাদ হয়ে পড়েছে। আমি ঈদের আগেই সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দেশনেত্রী বেগম জিয়ার মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি এবং তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অন্যায় সাজা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বিপুল জনপ্রিয় এই নেত্রী জনসমর্থনহীন সরকার প্রধানের চক্ষূশুল, তাই প্রতিহিংসার জ্বালা মিটাতেই অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপানসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নামে বানোয়াট অসত্য মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। সাজা দিয়ে বন্দী করা হয়েছে দেশনেত্রীকে। বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন জুলুমের গ্যাস চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। দেশের সর্বত্র রক্ত ঝরছে। সারাদেশে জনপদের পর জনপদে অসংখ্য মিথ্যা মামলা এবং সেই মামলায় হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে আসামি করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমনকি শিশু-কিশোরদের চলমান অরাজনৈতিক আন্দোলকে পৈশাচিক কায়দায় দমন করতে তাদেরও আসামি করা হয়েছে। অবৈধ সরকার দেশের রাজনীতিকে প্রতিহিংসাপরায়ণ ও সংঘাতময় করে তুলেছে। ’

রিজভী বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের আন্দোলনে সরকারের বর্বরোতার নিন্দা জানাচ্ছি। তাদের মিথ্যা মামলা ও রিমান্ড প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি করছি। একই সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেশের সকল রাজবন্দির মুক্তি দাবি করছি।

তিনি বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশু-কিশোরদের চলমান আন্দোলনে সামাজিক গণমাধ্যমে উসকানি ও সহিংসতার মিথ্যা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন থানায় ৫১টি মামলায় শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে ওই মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে। এই কোমলমতি শিশু-কিশোরদের আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারা মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সমাজের অগ্রগণ্য মানুষরাও বিস্মিত হয়েছে তারা যা পারেনি শিশু-কিশোররা চোখে আঙুল দিয়ে সেটা করে দেখিয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- শিশু-কিশোররা পথ দেখিয়েছে। কিন্তু এখন আন্দোলনরত শিশু-কিশোররা যে পথ দেখছে তাতে তারা প্রতিদিনই শিহরিত হয়ে উঠছে। তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, রিমান্ডের হাড় হিম করা অকথ্য নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে, এরপর পাঠানো হচ্ছে জেলখানায়। মুখে যাই বলুন, সরকার প্রধান শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছেন। অভিভাবকরা বাচ্চাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত, ভীত, শিহরিত। এখন শুধু ছাত্ররাই নয়, ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না আটক ও জুলুমের করালগ্রাস থেকে। গোয়েন্দা পুলিশ একের পর এক ছাত্রীকে আটক করে লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বিনা চিকিৎসায় মরণাপন্ন অবস্থা। খুব দ্রুত অস্ত্রপচার না হলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বেন। কিন্তু বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক কোনো ক্রমেই শিমুল বিশ্বাসকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করছেন না। নিম্ম আদালত ও উচ্চ আদালতে নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।’

রিজভী বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালগুলো দলীয় চেতনায় ভরপুর বলে বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। আমি অবিলম্বে শিমুল বিশ্বাসকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি। ’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী সদস্য শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।