সিটি নির্বাচন শেষে যা ভাবছে আওয়ামী লীগ

আমানউল্লাহ আমান
আমানউল্লাহ আমান আমানউল্লাহ আমান , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৮

সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি কর্পোরেশনের দুটিতে জয় লাভ করে অনেকটাই ফুরফুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সিটি কর্পোরেশনের মতো জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন দলটির নীতি নির্ধারণী নেতারা।

দলটির নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯০ শতাংশ স্থানীয় সরকারে আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ৮টি সিটি কর্পোরেশনের ৫টিতে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করেছে। নির্বাচন কমিশন অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও বহুমাত্রিক আবহাওয়ার এই সিটি নির্বাচনগুলো পরিচালনা করে তাদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপিকে মানুষ ভোট দেয়ার কোনো কারণ নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাররা বিএনপির অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জবাব দিয়েছে। কুমিল্লা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। এ দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।

দলটির নীতি নির্ধারণী নেতারা বলছেন, ৮টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ৫টিতে জয় লাভ করলেও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। দুটিতে বিএনপি ও একটিতে জাতীয় পার্টি জয় লাভ করায় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। একইসঙ্গে বিএনপি নিজেদের যোগ্যতায় জয়লাভ করতে পারেনি। বিএনপি জয় লাভ করেছে আওয়ামী লীগের দুর্বলতার সুযোগে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য জানান, সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন না। মন্ত্রীর এই অবস্থানে স্থানীয় আওয়ামী লীগে অনৈক্য দেখা দেয়। সেই সুযোগেই বিএনপির প্রার্থী সেখানে জয় লাভ করেছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা এই ফলাফল মেনে নিয়েছি। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সবাইকে এই ফলাফল মেনে নিয়ে স্থানীয় জনগণের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। সিলেটে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সিটি নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বহুমাত্রিক আবহাওয়ার মধ্যে পরিচালনা করা কঠিন। নির্বাচন কমিশন সেটা উৎরাতে পেরেছে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়ার বিষয় আছে। বিএনপিকে মানুষ ভোট দেয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের একটা প্রত্যাশা ছিল বিএনপির অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জবাব ভোটাররা দেবে। সব জায়গায় তাই হয়েছে।

তিনি বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনে আমাদের কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগ বিএনপির প্রার্থী নিয়ে নিয়েছে। তিনি একদিকে যেমন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখে উন্নয়ন কাজগুলো পরিচালনা করেছেন, অন্যদিকে তিনি আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছেন। আমরা ভোটে হেরে যাইনি, আমরা সঠিক পরিকল্পনায় হেরে গেছি। এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি, যে সমস্ত জায়গায় আমাদের দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করে তা দূর করার জন্য আমরা কাজ করছি। শহর অঞ্চলে শিক্ষিত ভোটাররা একটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

এইউএ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।