সিটি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনরা ধুলিঝড়ের সৃষ্টি করেছে : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৩ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮

আগামী তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন মহল একটা ধুলিঝড়ের সৃষ্টি করে মূলতঃ খারাপ কোনো চক্রান্তে মেতে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, আসলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সাধারণ ভোটারদের অধিকার ফিরে পাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, সেজন্য সরকার ভোট সন্ত্রাস ও ভোট কারচুপির নতুন নতুন মডেল আবিষ্কার করেছে। ’

রিজভী বলেন, ‘তিন সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অসংখ্য অভিযোগ আসতে থাকে। আবার পাশাপাশি বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট প্রার্থী এবং সমর্থক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সরকার ‘খুলনা-গাজীপুরের মতোই আসন্ন তিন সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলের ভোটার ও পোলিং এজেন্ট শূন্য করার অভিনব কৌশল নিয়েছে। সরকারের নির্দেশে তিন সিটি কর্পোরেশনে একপেশে নির্বাচনের ডিজাইনারের কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন যে সরকারের হাতের মুঠোয় সেই প্রমাণ নিজেরাই রেখে যাচ্ছে, যেমন তিন সিটিতে তফশিল ঘোষণার পর বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার না করার প্রজ্ঞাপন জারির উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। কিন্তু পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে সেই উদ্যোগ থেকে সরে আসে কমিশন।’

তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্রাসী আক্রমণ চালাচ্ছে। বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের তালিকা ধরে গ্রেফতার অব্যাহত আছে। অবিরাম পুলিশী হয়রানিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের অসহায় পরিবার। তাদের নামে মামলা না থাকলেও পেন্ডিং মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। এরপর আর তাদের অবস্থানও জানা যায় না। আর নির্বাচন নিয়ে এতো অনাচারের পরও নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে নির্বাচন কমিশন। ’

রিজভী বলেন, ‘বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গতকাল সারারাত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। বাসায় গিয়ে তারা পরিবারের সদস্যদের বলেছে ২ আগষ্টের আগে কাউকে যেন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দেখা না যায়। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে গ্রেফতার না করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও সেটিকে অমান্য করে পুলিশ লাগাতার গ্রেফতার করছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের। ধানের শীষের প্রার্থীর উঠোন বৈঠক ও সভাও ভেঙে দিচ্ছে পুলিশ।

এদিকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গণগ্রেফতারের গতি থামছেই না। প্রায় ৯০ শতাংশ আওয়ামী সমর্থিত লোকদের পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিল মারা ব্যালট পেপার ভোটকেন্দ্রে লুকিয়ে রাখা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ধানের শীষের প্রার্থী।

এছাড়া সিলেট সিটি নির্বাচনেও রাজশাহী ও বরিশালের মতোই চিত্র। ভোটারদের মধ্যে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও পুলিশ সেটি অমান্য করে ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। ফলে প্রশাসন ও ইসির ওপর ভরসা রাখতে পারছে না জনগণ। ’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘খালেদার মুক্তির জন্য কিছুই করতে পারবো না ।’ আপনি তো পারবেন না এজন্যই পথের কাঁটা সরাতেই তাকে কারাবন্দি করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জায় নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে মৃত্যুশয্যায় পাঠিয়ে সম্রাজ্ঞীর ক্ষমতা হাতে নিয়েছেন। তাই নিজের স্বার্থের জন্য দেশের জনপদের পর জনপদে রক্তস্রোত বইয়ে দিতে কোনো দ্বিধা করছেন না। ’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সহ দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিক শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।