খালেদার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রতিহিংসামূলক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৮

বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, “আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাহানা। মামলার তারিখ পড়লেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন’। শেখ হাসিনার এই বক্তব্য অমানবিক ও চরম প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।”

বুধবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

কুষ্টিয়াতে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর আক্রমণের বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- এমন দাবি করে রিজভী বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী আক্রমণের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দেয়া হয়েছে। সেটির প্রমাণ-

ক) মাহমুদুর রহমান অবরুদ্ধ থাকার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি দেখছি বলে এড়িয়ে গেছেন।

খ) কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সকল বিচারক বৈঠক করে তার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেন। তারা মাহমুদুর রহমানকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। কিন্তু বিচারকদের নির্দেশ পালিত হয়নি।

গ) ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটার পর আদালতে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে নব্য বর্গীদের হাতে তুলে দেয়।

ঘ) বেলা ১২টার মধ্যে জামিন হওয়ার পর থেকে তিনি অবরুদ্ধ। তখন থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ এগিয়ে আসেনি।

ঙ) মাহমুদুর রহমানকে নিরাপত্তা দিতে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকাশ্যে অমান্য করে।

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও তাকে রক্তাক্ত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন রিজভী।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে- এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও মন্ত্রী পদমর্যাদার নেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিন সিটি নির্বাচনে। সড়ক-মহাসড়ক দখল করে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছেন তারা। বড় পিকআপ ভ্যানে বিশাল কালার মনিটর লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ দেয়ার পরেও তারা সরকারের মুখ চেয়েই কাজ করছে। বর্তমানে ‘ইলেকশন-গেট কেলেঙ্কারি’র মূল হোতা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনগুলোকে অন্যায়ভাবে সরকারের অনুকুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি বারবার উপেক্ষা করছে কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা অরণ্যে রোদন, গল্পকথা মাত্র।’

তিন সিটিতে অন্যায়ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।

সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড- এমন মন্তব্য করে রিজভী আরও বলেন, ‘এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁওয়ে ছাত্রদল নেতা আলমগীর হোসেন বাদশা র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এসআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।