খালেদার আবেদন খারিজ, আত্মসমর্পণ দুই মাসের মধ্যে


প্রকাশিত: ০৭:৩৩ এএম, ০৫ আগস্ট ২০১৫

গ্যাটকো দুর্নীতির মামলার বৈধতা ও দুদক আইনের ধারা চ্যালেঞ্জ করে বেগম খালেদা জিয়ার করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রায় প্রকাশের পর হাতে পাওয়ার দিন থেকে দুই মাসের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নিম্ন আদালতে আত্নসমর্পণ করার আদেশ দিলেও খালেদা জিয়ার জামিন বহাল থাকবে বলে জানায় দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশেদ আলম খান।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে খালেদার পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল, রাগিব রউফ চৌধুরী ও এহসানুর রহমান প্রমুখ আইনজীবী। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশেদ আলম খান।

তার আগে গত ১ আগস্ট (রোববার) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এই রিটের ওপর রায়  ঘোষণার জন্য আজ বুধবার দিন ঠিক করেন।  তার আগে গত ১৭ জুন এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা (সিএভি) করে আদেশ দেন।
 
রায় ঘোষণার পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা নিয়ে খালেদা জিয়ার করা দুটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে রুল জারি করেছিল। উক্ত রুলের ওপর উভয়পক্ষের শুনানি করে বিষয়টি রায়ের জন্য ছিল আজ।

তিনি বলেন, দুদকের আইন এবং মামলা চ্যালেঞ্জ করে বেগম খালেদা জিয়ার করা দুটি রিট আবেদন খারজি করেছেন হাইকোর্ট। তবে তার জামিন বহাল থাকবে। রায় প্রকাশ পাওয়ার দিন থেকে দুই মাসের মধ্যে ওনাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। খালেদার আইনজীবীর দাবি ছিল একই অভিযোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু খালেদার মামলা চলছে। তার আইনজীবীর দাবি তত্বাবধায়ক সরাকারের সময়ে দায়ের করা মামলা চলতে পারে না।

আমরা দুদকের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছি কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে দুদক তার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারে। অপর দিকে আপিল বিভাগের এক আদেশে বলা হয়েছে দুইজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করার পর একজনের টি বাতিল করা হলেও অপর মামলা চলতে আইনী কোন বাধা নেই।

অপর দিকে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করবো। আশা করি এর প্রতিকার পাব।

দুদক আইনে গ্যাটকো মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার আনা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট মামলা প্রশ্নে রুল জারি ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দেয়। এর আগে মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। রিটের শুনানির পর মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা কেন ‘বে-আইনি ও কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করা হয় এবং মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পরে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে যায়।

দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে।

২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্রগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।

# গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদার রিটের রায় আজ

এফএইচ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।