অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৮

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকি বিল্লাহকে আটক করার পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা, গ্রেফতার-নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ বিকেল ৪ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকদের সমাবেশ’ হয়। সেখান থেকে তাদের আটক করা হয়েছিল।

press-club

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান জাগো নিউজকে বলেন, তাদের আটক করা হয়েছিল। তবে পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

সমাবেশে অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ বলেন, আমরা চাই, অবিলম্বে আমাদের সন্তান, ছোটা ভাইদের ওপর সরকারের প্রশ্রয়ে যে হামলা ও নির্যাতন হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হোক। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হোক।

প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পর প্রায় তিন মাসেও এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় গত শনিবার থেকে ফের আন্দোলনে নামে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হচ্ছেন। শনিবার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এরপর রোববার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সোমবারও তাদের ওপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হামলা চালানো হয়। সেখান থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনকে আটক করা হয়। আর আজ মঙ্গলবার ফারুক হোসেনসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও গাড়ি পোড়ানোর দুই মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হলো। আজ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তাদের তিনজনকে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশর পরিদর্শক বাহাউদ্দীন ফারুকি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ শুভ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপর দুইজন হলেন-তরিকুল ইসলাম (২২) জসিম উদ্দিন (২১)।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় পাঁচ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে এক শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।

এই কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটাব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

সর্বশেষ গত ২৭ জুন জাতীয় সংসদে ‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকতে হবে, কমানো যাবে না’- বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই তো আজ আমরা স্বাধীন। তাদের অবদানেই তো আমরা দেশ পেয়েছি।’

জেইউ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।