কর্মসূচি পালনের জন্য মেয়র ও ডিএমপি কমিশনারকে বিএনপির চিঠি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৮

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ৯ জুলাই (সোমবার) দেশব্যাপী প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও ডিএমপি কমিশনারের বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কারযালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

রিজভী আহমেদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে গতকাল (সেমবার) দলের মহাসচিব আগামী ৫ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ৯ জুলাই দেশব্যাপী প্রতীকী অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও ডিএমপি কমিশনার বরাবরে অবহিতপত্র জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৯ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালিত হবে। এজন্য আমরা ইতোমধ্যে রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট এবং মহানগর নাট্যমঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। অনুমোতি পেলে এই দুটি স্থানের মধ্যে যেকোনো একটিতে আমাদের কেন্দ্রীয় প্রতীকী অনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ধারাবাহিক বর্বর পৈশাচিক হামলায় সারাদেশের মানুষ ক্ষোভে ধিক্কার জানাচ্ছে। গতকালও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। এসময় ছাত্রীদের যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তা নারীদের ওপর ’৭১ -এর হানাদার বাহিনীর নির্মতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদকে কোন অপরাধের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে? ধারালো অস্ত্রের হাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত কোটা সংস্কার আন্দোলনের অপর নেতা নুরু যাতে চিকিৎসা না পায়, সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা হানা দেয়। চিকিৎসা না দিয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও তাকে বের করে দেয়া হয়। সে গতকালও সাংবাদিকদের সামনে বাঁচার আকুতি জানিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় ধরাশায়ী না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরত ছাত্রনেতা ফারুকের ওপর উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। সাহায্যের জন্য একজন নারী দ্রুত তার দিকে ছুটে গেলেও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তার ওপর কোনো দয়া দেখায়নি।’

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রায় দুইমাস আগে জাতীয় সংসদে সম্পূর্ণরূপে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। আসলে সেদিনই আমরা বলেছিলাম- এই ঘোষণা একটি নাটক ও ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি প্রতারণা। এখন সেটি অক্ষরে অক্ষরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আসলে সেদিন প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রতারণার কৌশল নিয়েছিলেন। আন্দোলনকারীদের প্রতি সরকারের আচরণে এটা আবারও প্রমাণিত হলো যে, শেখ হাসিনা যাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘুঘু চরিয়ে দিতে মোটেই দ্বিধা করেন না।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার নিম্ন আদালতকে সম্পূর্ণভাবে কব্জায় নিয়ে এখন সর্বোচ্চ আদালতকেও হাতের মুঠোয় নিয়েছে কিনা সেটি নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। হাইকোর্ট জামিন দিলে সে জামিন স্থগিত করা হয় এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় আছেন বলেই বিচার প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত করা শেখ হাসিনার হুকুমেরই বাস্তবায়ন।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. রফিক শিকদার, শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।