‘একটা দেশের রাষ্ট্রদূত কী বলল, সেটা নিয়ে দেশ চলে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ০১ জুলাই ২০১৮

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এভাবে কথা বলা সমীচীন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

রোববার সচিবালয়ে ঢাকায় সফররত যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী (এশিয়া প্যাসিফিক ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস) মার্ক ফিল্ডের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অনিয়মের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ওঠার পর এ নির্বাচন নিয়েও একই ধরনের অভিযোগ ওঠায় উদ্বেগ বেড়েছে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এভাবে কথা বলাটা সমীচীন হয়নি। কারণ পৃথিবীর সব দেশেই, পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন হয়, ভারতে নির্বাচন হয়, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন নিয়ে কিন্তু এখনও বিতর্ক চলছে। কিন্তু আমাদের এই নির্বাচনগুলো নিয়ে তেমন কোনো বিতর্ক হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অনভিপ্রেত। একটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আরেকটা দেশের রাষ্ট্রদূতের কথা বলা সমীচীন নয়। এটা দৃষ্টিকটু হয়েছে বলে মনে করি।’

গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলবে কি না- জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিল ক্লিনটন বিএনপির এক কর্মীর কাছে বলেছেন- ওয়ার্ল্ড পলিটিকস ইজ নাউ ডিফিকাল্ট। কাজেই একটা দেশের রাষ্ট্রদূত কী বলল, সেটা নিয়ে দেশ চলে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন দৃঢ়চেতা নেতা। তার অধীনে আগামী নির্বাচন হবে এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে।’

খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে দাবি করে বার্ষীয়ণ রাজনীতিবিদ তোফায়েল বলেন, ‘দুটি নির্বাচনে নিয়ে কিন্তু তেমন কোনো কথাবার্তা হয়নি। গাজীপুরে নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য হয়েছে এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো ভোট কাস্টিং হয়েছে ৫৭ শতাংশ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পেয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজারের মতো ভোট। আর বিএনপির প্রার্থী পেয়েছে ২ লাখের মতো ভোট। ভোটের রেশিও দেখলেই বুঝা যায় যে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।’

‘গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কিন্তু তত বেশি কোনো বাস্তবসম্মত কথা বলার সুযোগ পায়নি। তাদের যে নেতা লন্ডনে থাকেন তিনিই তো বলেছেন, তাদের এজেন্ট ছিল না। আমাদের দল টাকা দিয়ে তাদের এজেন্ট...যে দলের এজেন্ট টাকা খেয়ে সরে যায়, সেটা কোনো দল হলো। তাদের এজেন্টদের আমাদের দলের লোক টাকা দিতে যাবেই বা কেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি বলেছে, আগামী তিনটি নির্বাচন দেখার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী তিনটা নির্বাচনও অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমি মনে করি, বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। কারণ ব্রিটিশ মন্ত্রীও বলে গেলেন, দুবার যদি তারা নির্বাচন না করে তাদের তো নির্বাচন কমিশনের রেজিস্ট্রেশন থাকবে না। আরেকটি নির্বাচন না করলে বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলেই আমি মনে করি।’

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপিরও নির্বাচন নিয়ে কাজ করা উচিত, মানুষের কাছে যাওয়া উচিত।’

আরএমএম/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।