আজ গ্রামগঞ্জের নেতাদের পদচারণায় মুখরিত হবে গণভবন

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:২৬ এএম, ৩০ জুন ২০১৮

গ্রামগঞ্জের নেতাদের পদচারণা ও কলকাকলিতে আজ মুখরিত হয়ে উঠবে গণভবন। তাদের পদচারণায় ধন্য হবে গণভবন। স্বার্থক হবে গণভবনের নাম। সে সঙ্গে স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠবে আরেকটি নাম, সেটা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আজ গণভবনে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তৃণমূল নেতারা ভিড় জমাবেন। এ জমায়েতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নির্বাচনী দিক নির্দেশনা দেবেন। গ্রামগঞ্জের নেতাদের কথাও শুনবেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, ওয়ার্ড নেতাদের একটা বিরাট ভূমিকা থাকে। গ্রামের মানুষ কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে এ বিষয়ে এসব নেতারা দায়িত্বও পালন করেন। এবার গণভবনে তাদের ডাকা হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তাদের সামনে রেখে নির্বাচনী দিক নির্দেশনা দেবেন এবং তাদের কথাও শুনবেন।

একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। ফলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যেও জোরেসোরে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার তারা আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে এক বিশেষ বর্ধিত সভা আজ বেলা ১১টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, যে কোনো দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বা কোন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিতে বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়া এ সভায় সরকারের উন্নয়ন প্রচার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরা, ঘরে ঘরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বুঝাবেন তারা কেন নৌকায় ভোট দেবেন এবং বিগত সরকারের সঙ্গে বর্তমান সরকারের তুলনামূলক উন্নয়নচিত্র তুলে নৌকার পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠনের নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, দলের মধ্যে যারা ভাঙন সৃষ্টি করছে বা দ্বন্দ্ব জিয়ে রাখছে তাদের বিষয়েও দিক নির্দেশনা থাকবে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের বাইরে যদি কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে চায় তাদের বিষয়ে কঠোর দিক নির্দেশনা থাকবে। কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে চিরজীবনের জন্য বহিষ্কারের নির্দেশনা আসতে পারে।এছাড়া দলের মনোনয়ন না পেয়ে অন্য দলে গিয়ে বা স্বতন্ত্র নির্বাচনে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বদনাম করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে না।

সূত্র আরও জানায়, নির্বাচনের সামনে সরকারের ৯ বছরের উন্নয়ন সংম্বলিত পুস্তিকা দেয়া হবে নেতাদের হাতে। এ বিষয়ে পড়ে জেনে যেন সাধারণ মানুষের কাছে বলতে পারে সে বিষয়েও দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জাগো নিউজকে জানান, আওয়ামী লীগের এই বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দলীয় ইউপি সদস্যরাও বিশেষ বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রহমান বলেন, যেহেতু আগামী ডিসেম্বর নাগাদ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেহেতু দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেবেন।

অন্য প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে যদি কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হয় তাদের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো নির্দেশনা আসতে পারে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বর্ধিত সভায় সমসাময়িক রাজনীতি, নির্বাচনে দলীয় ঐক্য অটুট রাখা, জনসংযোগ বৃদ্ধি করা, দলের তৃণমূল নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে কাজ করার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।

এছাড়া সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমূহ জনসম্মুখে তুলে ধরা, বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং বিগত সরকারের সঙ্গে বর্তমান সরকারের তুলনামূলক উন্নয়নচিত্র তুলে নৌকার পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠনের নির্দেশনাও দেয়া হবে তৃণমূলের এ বর্ধিত সভায়।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, পৌর সভার মেয়র এবং পৌরসভা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা করে আওয়ামী লীগ।

তারই ধারাবাহিকতায় এবার ইউনিয়ন, পৌরসভা, ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এ সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক সঙ্গে এ সভা সম্পন্ন করা কষ্টসাধ্য বিবেচনা করে দু’টি ধাপে এই বিশেষ বর্ধিত সভা সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৭ জুলাই শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তৃণমূলের নেতা ও দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা অংশ নেবে।

এফএইচএস/জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।