জনগণের রায় প্রত্যাখ্যান করে গণতন্ত্র অবজ্ঞা করেছে বিএনপি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নেতিবাচক আন্দোলন জনগণ পছন্দ করে না, এটা গাজীপুরে প্রমাণ হয়েছে। বিএনপি জনগণের রায়কে প্রত্যাখ্যন করে গণতন্ত্রের রীতিনীতিকে অবজ্ঞা করেছে।
বুধবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজীপুরের বিজয় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পক্ষের রায়। এটা গণতান্ত্রিক জনগণ ও অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রায়। আমরা বিশ্বাস করি দেশের জনগণ এ বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে।
এ সময় তিনি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি জাতির সামনে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করছে বলেও মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জনগণের রায়কে মেনে না নিয়ে উল্টো মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য জাতির সামনে উপস্থাপন করছে। আজ আবার শুনলাম- তারা আদালতকে বলেছেন গণশুনানির জন্য। বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে।
তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। সব প্রার্থীর মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। সেখানকার মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার (২৬ জুন) জিসিসি নির্বাচনে ৪ লাখ ১০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার পেয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬১১ ভোট। ভোটের এই যে বিশাল ব্যবধান এটা আওয়ামী লীগের প্রতি গাজীপুরের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা পুরানো কৌশলেই আছে। সেটা হলো ‘তাদের প্রার্থী জিতলে আছি হারলে নাই’ এর মানে তাদের প্রার্থী হারলেই সেখানে তারা কারচুপির অভিযোগ আনে।
তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে তারা শুধু আদালতের স্মরণাপন্ন নয়, বিদেশীদের কাছেও নালিশ করবে, তাদের দ্বারস্ত হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, কলাবাগানে বসে বিএনপি নেতারা নির্দেশনা দিয়েছেন গাজীপুরে নৌকার ব্যাজ পরে ভোট কেন্দ্রে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতারা কোথায় কী ষড়যন্ত্র করেছে তার রিপোর্ট আমাদের কাছে আছে। নয়া পল্টন থেকে একেক সময় একেক তথ্য দেয়া হয়েছে। তারা নিজেরাও জানে না কোন তথ্য সঠিক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজীপুরে ভোট ডাকাতি হয়েছে এটা তথ্য প্রমাণসহ বলতে হবে। এমনি ফাঁকা বুলি আওড়ালে হবে না। ভোট ডাকাতি হয়েছে, কেন্দ্র দখল হয়েছে, বিএনপি এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে এ সব কিছুর প্রমাণ দিতে হবে।
তিনি বলেন, গাজীপুরের নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খুলনা দিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় শুরু হয়েছে, গাজীপুরেও হলো। আগামীতেও আমাদের বিজয় হবে। এগুলো সরকারের উন্নয়ন, দেশের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ফসল।
এ সময় সরকারের প্রতি আস্থা রাখায় গাজীপুরের আপামোর জনগণকে অভিনন্দন জানান এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচএস/আরএস/এমএমজেড/আরআইপি