আকর্ষণের কেন্দ্রে ‘বঙ্গবন্ধু’
দলের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন নিজস্ব ভবন পেয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ। ১০তলা ভবনটির প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ডানদিকে চোখে পড়বে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য।
মহান নেতার এ ভাস্কর্য খুব সহজেই আকৃষ্ট করছে আওয়ামী লীগের কর্মী ও ভবনটি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের। সুযোগ পেয়ে প্রায় সকলেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করে নিচ্ছিন।
শনিবার সকালে ভবনটি উন্মুক্ত করার পর দুপুর পর্যন্ত ওই অঞ্চলে অবস্থান করে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পাশাপাশি অনেককে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে দেখা গেছে। অবার অনেককে ভবনের সামনের রাস্তায় সামিয়ানার নিচে বসে খোশ গল্প করতে দেখা যায়।
ভবনটিতে ঢুকতেই হাতের বামপাশে রয়েছে অভ্যর্থনা ডেস্ক। সেখানেও বেশকিছু কর্মীকে বসে আড্ডা দিতে দেখা যায়। তবে ভবনটিতে প্রবেশ করা সকলের দৃষ্টি যেন কেড়ে নিচ্ছেন মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যারাই ভবনে প্রবেশ করছেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সঙ্গে ছবি তুলছেন, প্রায় তিন ঘণ্টা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অবস্থান করে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করা খালেদ নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মহান নেতা। বঙ্গবন্ধু না থাকলে আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পারতামন না। বঙ্গবন্ধুই আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এমন মহান নেতার ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারা বিরাট সোভাগ্যের ব্যাপার। আর সেটি যদি হয় আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভবনে, তাহলে তো তার মর্যাদায় বেড়ে যায়।
বরিশালের বাসিন্দা খালেদ আরও বলেন, সামনে নির্বাচন, এ সময় নিজস্ব এমন ভবন উদ্বোধন আমাদের আরও চাঙ্গা করবে। আমরা নতুন উদ্যমে কাজ করতে পারবো। দেশের উন্নয়নের জন্য আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে। আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে যা যা করার দরকার আমরা তার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
জাবেদ হোসেন নামের আরেকজন বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ১০তলা নিজস্ব ভবন উপহার দিলেন। প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন দলের প্রতি নিষ্ঠাবান ও সততা থাকলে অনেক কিছু করা সম্ভব। এমন একটি দলের কর্মী হতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।
ভবনের কোন বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লেগেছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ১০তলা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি রয়েছে লিফট। প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে উন্মুক্ত বারান্দা। এর সবকিছুই সুন্দর। তবে মূল আকর্ষণ রয়েছে নিচ তলায়। ভবনে ঢুকেই হাতের ডানে দেখা যাবে, সেই আকর্ষণ। আর তাহলো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমার কাছে এটিই ভবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়।
এদিকে ভবনের সামনের রাস্তায় গোল হয়ে বসে আড্ডা দেয়া শরিফুল ইসলাম নামের একজন বলেন, অনেক অপেক্ষার পর আমরা নিজস্ব নতুন ভবন পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এ উপহার দিলেন। এমন দৃষ্টিনন্দন নিজস্ব ভবন আমাদের কাজের স্পৃহা আরও বাড়িয়ে দেবে। সামনের জাতীয় নির্বাচনে আমরা আবার সরকার গঠন করবো ইনশাল্লাহ।
ভবনটিতে প্রবেশের প্রধান ফটকের ওপরে বড় বড় অক্ষরে বাংলায় লেখা হয়েছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। দলীয়কর্মীদের একটি অংশকে প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে এই লেখাসহ নিজেকে ক্যামেরা বন্দি করতে দেখা যায়।
এমনই একজন যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা পারভেজ। তিনি বলেন, আজই আমাদের ১০তলা ভবন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের জন্য বিরাট গৌরবের। বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের এমন নিজস্ব ভবন নেই।
এদিকে ভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী, চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় রয়েছে সাধারণ অফিস, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও মিডিয়া রুম। ষষ্ঠ তলায় সম্মেলন কক্ষ এবং সপ্তম তলায় দলের কোষাধ্যক্ষের অফিস। অষ্টম তলায় দলের সাধারণ সম্পাদকের এবং নবম তলায় রয়েছে বুলেটপ্রুফ ডাবল গ্লাসবিশিষ্ট সভাপতি অফিস। এ তলায় রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এ ছাড়া সপ্তম থেকে নবম তলায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সম্পাদকমণ্ডলীর কেন্দ্রীয় নেতাদের কক্ষ রাখা হয়েছে। রয়েছে সাংবাদিক লাউঞ্জ, ভিআইপি লাউঞ্জ ও ডরমিটরিও। আর দশম তলায় রয়েছে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবস্থা। তবে ভবন উদ্বোধনের প্রথম দিন নিচতলা ছাড়া অন্য ফ্লোরগুলোতে কর্মী ও দর্শনার্থীদের খুব একটা আনাগোনা দেখা যায়নি।
এমএএস/এনএফ/জেআইএম