হাসিনামার্কা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না : খালেদা


প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ০১ আগস্ট ২০১৫

দলীয় সরকারে অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম- রাজশাহী শাখার সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সমালোচনা করেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন চায় এবং সে নির্বাচনে অংশগ্রহণও করতে চায়। তবে সেই নির্বাচন অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। আমি আমার এ বক্তব্য থেকে এক পা-ও সরে আসিনি। কিন্তু পত্রিকায় আমার এ বক্তব্যকে অন্যভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

খালেদা বলেন, ‘হাসিনামার্কা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না। কারণ এ সরকারের কোনো জনপ্রতিনিধিত্ব নেই। এরা নির্বাচিত সরকার নয়। তাই জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।’

নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যা করছে তা ভুলে যেতে হবে। কারণ বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বিএনপি গণতন্ত্র ও উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। এ ধারায় বিএনপি গুণগত পরিবর্তন আনতে চায়। এর লক্ষ্য হচ্ছে দেশের উন্নয়ন, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করা।’

একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কারো কোনো ক্ষতি হবে না। অথচ ক্ষমতাসীনরা সরকারি চাকরিজীবীদের ভয় দেখাচ্ছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।’ ক্ষমতায় থাকার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকারি চাকরিজীবীদের এমন ভয় দেখাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারবে না। কারণ বাংলাদেশের মাটিতে বিএনপির জন্ম হয়েছে। বিএনপি কারো কথায় চলে না। বরং কিছু পরগাছা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করছে। তারা নিজেরাই নিজেদের কথা শোনে না। তারা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য পারলে জুতাকে চুমু এবং সালাম করবে।’

মাগুরায় মাতৃগর্ভে শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে খালেদা বলেন, ‘যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরাই মায়ের পেটে শিশুকে গুলি করেছে। অথচ তারা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা কিছু না করলেও তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় তাদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।’

নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা বলেন, ‘দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এসব বিবেচনা করে জেলাগুলোর কমিটি ঢাকা থেকে দেয়া হবে না। যারা জীবন দিতে ও সংগ্রাম করতে প্রস্তুত আছে তাদের দায়িত্ব দেয়া হবে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের পরামর্শ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বয়োজ্যেষ্ঠদের কমিটি থেকে সরে যেতে হবে এবং নতুনদের স্থান দিতে হবে। তবে বয়স্করাও বাদ যাবেন না। তারা পরামর্শদাতা এবং উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

নির্বাচন কমিশনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যর্থতার দায় নিয়ে নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিৎ। কারণ তিনি এখন নাবালকদেরও ভোটার বানাচ্ছেন। তার যদি নূন্যতম আত্মসম্মানবোধ থাকে তাহলে সরে দাঁড়ানো উচিৎ।’

কোনো রাজনৈতিক বিভেদ ও বিভাজন নয় আগামী ঐক্যের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দন সরকার, চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, যুগ্মমহাসচিব মাহাবুব উদ্দিন খোকন, রাজশাহী বারের নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুস সাদাত, সহসভাপতি মিজানুর রহমান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আনোয়ার কবির খান ঈসা প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এমএম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।