বিএনপি নেতা ওয়াহিদুল আলমের জানাজা সম্পন্ন, কাল দাফন
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের তৃতীয় দফা জানাজা বাদ আসর চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম ও নয়াপল্টনে দ্বিতীয় দফা জানাজা হয়।
সোমবার বেলা ৩টা ১৫মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে মরহুম সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মরদেহ চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আনা হয়। এরপর বাদ আসর চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মাঠে তৃতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা ওবাইদুল হক নঈমী। জানাজার শুরুতে পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ওয়াহিদুল আলমের ছোট ভাই সৈয়দ শহীদ উদ্দিন দুলু।
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাবেক মেয়র মাহমুদুল হক চৌধুরী, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গনি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান, অ্যাডভোকেট কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, প্যানেল মেয়র চৌধুরীর হাসান মাহমুদ হাসনী, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসীন কাজী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুল, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী বেলাল, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম রাসেল, উত্তর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, আলহাজ্ব সালাউদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন সিকদার, অ্যাডভোকেট আবু তাহের, সেকান্দর চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি শেখ মহিউদ্দিন, ইফতেখার মহসিন, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, এইচ এম রাশেদ খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রশিদ মামুন, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি আজিজ উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিস আক্তার টিটুসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
জানাজার শুরুতে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মৃত্যুতে বিএনপি একজন প্রকৃত বন্ধু ও সংগঠক হারালো। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করা ওয়াহিদুল আলম ছিলেন দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি চট্টগ্রাম ও হাটহাজারীর জন্য কাজ করেছেন। তাই তিনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।’
‘ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে সংসদ সদস্য ও হুইপ হলেও ওয়াহিদুল আলম ব্যবসা বাণিজ্য করেননি। এ ধরনের রাজনৈতিক নেতা বর্তমানে পাওয়া দুষ্কর। ঢাকা ও চট্টগ্রামে নিজের নামে কোনো বাড়ি নেই। বিএনপির প্রকৃত বন্ধু ও সফল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ওয়াহিদুল আলম সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’
জানাজা শেষে সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের লাশ তার গ্রামের বাড়ি লালিয়ার হাটে নিয়ে যাওয়া হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় হাটহাজারী কলেজ মাঠ ও বাদ যোহর লালিয়ার হাট মাদরাসা মাঠে দুইদফা জানাজার পর সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ :
যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সহ–সভাপতি হিসেবে বিএনপির রাজনীতিতে হাতেখড়ি সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম বিএনপি থেকে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে প্রথম ধানের শীষে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্যসহ মোট চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১–০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালনসহ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়কও ছিলেন তিনি। সর্বশেষ বিএনপির কাউন্সিলে তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়। সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের বড় মেয়ে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য।
আবু আজাদ/জেএইচ/এমএস