প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আশাবাদী মওদুদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ২৫ মে ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মওদুদ বলেন, ‘আমরা আশা করব প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরবেন না। আমরা আশা করি, তিনি তিস্তার পানি চুক্তি বাস্তবায়ন করেই ফিরবেন। আর না হলে আমরা বলব, তিনি (শেখ হাসনিা) ব্যর্থ হয়েছেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ‘খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ’ কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ‘এত দিন সরকার নিশ্চুপ ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাদের কাছে তালিকা আছে। তাহলে এ অভিযান আগে থেকে চালিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি কেন? কারণ হলো, এ মাদক ব্যবসায় তাদের নেত্রীবৃন্দ জড়িত। হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করেছে।’

তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে মানুষ মারা শুরু করেছে সরকার। ৫৮ জন মানুষ মারা গেছে গত ৮ মে থেকে ২৫ মে, এই ১৭ দিনে। মানুষের কি জীবনের মূল্য নেই। আমরা চাই মাদক নির্মূল করা হোক। এ দায় দায়িত্ব সরকারের। মানুষ মেরে মাদক বন্ধ করা যায় না। এরা তো মালিক না, এরা তো বাহক। তারা বিক্রি করে মালিককেই দেয়। সেই মালিক কারা? তারা এ সরকারের মদদপুষ্ট। এভাবে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। মাদক ব্যবসা উচ্ছেদ হোক। কিন্তু মানুষ মারা চাই না।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এটি বিরোধী দলকে উচ্ছেদ করতে চায়। কিছু দিনের মধ্যেই দেখবেন মাদকের নামে বিরোধী দলের নেতাদের বন্দুকযুদ্ধের মুখোমুখি করবে।’

নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘একটি তল্পি বাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইবে তাই করবে। আচরণবিধি পরিবর্তন করছে। এখন সংসদ সদস্যরা প্রচারণা চালাতে পারবে। সংসদ সদস্য মানে তো আওয়ামী লীগের। এরা যেন প্রচারণা চালাতে পারে। এটি দূরভীসন্ধিমূলক লক্ষ্য আছে। তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি করেছে। তারা সংসদ রেখে আগামী নির্বাচন করতে চায়। তাই এই নিয়ম রেখেছে। সংসদ সদস্য থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য করেছে। আচরণবিধি পরিবর্তন করা ষড়যন্ত্রের অংশ।’

সরকার খুলনার স্টাইলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুলনায় নির্বাচন হয়নি। পুলিশি নির্বাচন হয়েছে। জনগণের নির্বাচন হয়নি। খুলনা প্রায় ১০০ কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টরা দাঁড়াতে পারেনি। এখন তারা খুলনা স্টাইলে নির্বাচন করতে চায়। তারা যদি সে চেষ্টা করে এবার আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করব। আর যদি তারা খুলনার মতো নির্বাচন করে তাহলে আবার নতুন করে প্রমাণ হবে সাধারণ নির্বাচন তাদের অধীনে সম্ভব নয়।’

মওদুদ বলেন, আমাদের আন্দোলন গণতন্ত্রের আন্দোলন। এটি অব্যাহত থাকবে। আমরা বর্তমান অবস্থার অবসান চাই। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে সম্পূর্ণভাবে নৈরাজ্য বিরাজ করছে না। কোনো জবাবদিহিতা নেই। ভয়ঙ্কর একটি অবস্থা। এ অবস্থার অবসান চাই। তাদের দুর্নীতি, বেপরোয়া অবস্থা। মানুষ এর অবসান চায়।

তিনি বলেন, আইন আদালত বা শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। কোনো আন্দোলন ছাড়া জনগণের কোনো দাবি কোনোভাবে আদায় হয়নি।

রমজান মাসের পর কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে জানিয়ে বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, একদিন বেশিও যদি খালেদা জিয়া কারাগারে থাকেন তাহলে তার জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী সভাপতিত্বে হুমায়ুন কবির বেপারীর সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএইচ/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।