গাইবান্ধার পাটের বাজারে ক্রেতা নেই
গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট-বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু পাট বিক্রির সুযোগ না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ি ও ব্যাপারিরা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। ফলে ক্রেতার অভাবে হাট-বাজারগুলোতে কেনাকাটা নেই বললেই চলে। ফড়িয়া ব্যাপারিরা যে সামান্য কেনাকাটা করছেন তাতে পাটের দাম একেবারেই কম।
প্রতি মণ ১ হাজার ৪শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫শ টাকা দরে পাট বেচাকেনা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। সরকারি ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পাট কেনাকাটা শুরু হয়নি। আর এ কারণেই তার প্রভাব পড়েছে পাটের বাজারে।
চলতি মৌসুমে গাইবান্ধা জেলায় ১৪ হাজার ২শ ৫৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৭শ ৮০ হেক্টর জমিতে তোষা জাতের ও ৪শ ৭৫ হেক্টরে স্থানীয় জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। এবারে জেলায় মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬শ ১৮ বেল পাট উৎপাদিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এবারে আগাম বন্যার ফলে জেলার আবাদি জমিগুলো ডুবে যাওয়ায় পাটের মান কিছুটা খারাপ হয়েছে। বাজারে ওঠা পাটের মান দেখেই তা বোঝা যায়। বেশির ভাগই নিম্নমানের এসএমআর। তবে কিছু কিছু ক্রস জাতের পাট মিলছে।
গাইবান্ধা পাট দফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতেই এখন পাটের চাষ হয়ে থাকে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে এখন পাটের চাষ বেড়েছে। এসব এলাকার পাট ফুলছড়ি, কামারজানি, সুন্দরগঞ্জ, বেলকা, সাঘাটা, ভরতখালি, জুমারবাড়ি ইত্যাদি হাট-বাজারে বেচাকেনা হয়। এসব হাট-বাজার থেকে স্থানীয় ব্যাপারি ও ব্যবসায়িরা মূলত পাট কেনাকাটা করে থাকেন। তারাই এসব কেনা পাট বিভিন্ন সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি করে।
কিন্তু গতবার যেখানে ৭টি মিল এজেন্সি ছিল এবার সেখানে মাত্র ৩টি ক্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব ক্রয় কেন্দ্রের কাছে ব্যবসায়ি ও ব্যাপারিদের গত বছরের প্রায় দেড় কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এদিকে এই ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে এখনো লাকি পার্সেস করা হয়নি। ফলে বিক্রির কোনো ক্ষেত্র না থাকায় ব্যাপারি এবং স্থানীয় ব্যবসায়িরা হাট গুটিয়ে বসে রয়েছেন।
এ কারণে বাজার দর উঠার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা ফড়িয়া ব্যাপারিদের কাছে যেন তেন দামে পাট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের উৎপাদন ব্যয়ই উঠছে না। বাজার দাম কম থাকায় অনেক কৃষক হাটে পাট নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে না পেরে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
অমিত দাশ/এমজেড/এমআরআই