‘হেঁটে যেতে পারবো হুইল চেয়ারের প্রয়োজন নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৮ পিএম, ০৭ এপ্রিল ২০১৮

হাঁটুতে ব্যথা। হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা ছিল। তাতেও উনি বসতে রাজি হননি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি হেঁটে যেতে পারবো হুইল চেয়ারের প্রয়োজন নেই।

শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে সার্বিক তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রি. জে. আব্দুল্লাহ আল হারুন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়েছিল। দুপুর দেড়টার দিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে ফের কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর পৌনে ২টায় তাকে বহনকারী গাড়িবহর কারাগারে পৌঁছায়।

বিএসএমএমইউ’র পরিচালকের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, কেবিন ব্লক থেকে এক্স-রে রুম দু মিনিটের হাঁটার পথ। আমরা যতটুকু শুনেছি ও জেনেছি খালেদা জিয়ার হাঁটুতে ব্যথা। এ অবস্থায় একজন রোগীকে কেবিন ব্লক থেকে এক্স-রে রুমে হাটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা আইনের লঙ্ঘন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তার জন্য এবটির হুইল চেয়ার রাখা হয়েছিল। আমি তাকে হুইল চেয়ারে করে এক্সরে রুমে নিয়ে যাওয়া কথা বলেছিলাম। কিন্তু উনি রাজি হননি। বরং উনি আমাকে বলেছেন, আমি হেঁটে যেতে পারবো হুইল চেয়ারের প্রয়োজন নেই।

তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউ’তে আসার পর তাকে কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কেবিনে নেয়া হয়। সেখানে বেগম জিয়া তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কেবিনে তার সঙ্গে তার চিকিৎসকরা কথা বলেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ড. মামুন, ড. ওয়াহিদুর অরহমান, ড. এফএম সিদ্দিকী এবং কারা চিকিৎসক ড. শুভ। তারা এক্স-রে করার সময়ও উপস্থিত ছিলেন।

বেগম জিয়া কেবিনে যাওয়ার পর তিনি কিছুক্ষণ রেস্ট (বিশ্রাম) নেন। এরপর রেডিওলজী ও ইমেজিং বিভাগের তার হাড়ের বিভিন্ন অংশের এক্স-রে করা হয় (মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী)। আশা করছি, আগামীকাল (রোববার) এক্স-রের রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এখানে এক্স-রে ছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষা করা হয়নি।

তিনি কি পুরোপুরি সুস্থ আছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, তিনি সুস্থ নাই এটা বলা যাবে না। আমরা আপাতদৃষ্টিতে তাকে ভালোই দেখেছি। তিনি হেঁটে এক্স-রে করতে গিয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর তার সুস্থতার বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে। এক্স-রের রিপোর্ট আগামীকাল কারা কর্তৃপক্ষকে দেয়া হবে। তারা সেই রিপোর্ট বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমকে পাঠাবেন।

এর আগে শুক্রবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা বেশি ভালো নয় তবে তার মনোবল শক্ত রয়েছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তার ব্যক্তিগত চিকিৎককে দিয়ে করানোর দাবিও জানান তিনি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। পুরান ঢাকার বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া এ রায় দেন।

মামলার রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। সেদিন থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন।

এআর/এসআই/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।