আজ রায়ের কপি পেলে রোববার খালেদার জামিনের আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২০ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, জাল কাগজ দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে অন্যদের অপরাধের বিষয়ে উল্লেখ করা হলেও বেগম জিয়ার অপরাধের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ৪০৯ ধারায় এমন শাস্তি হতে পারে না।

আজ (বৃহস্পতিবার) রায়ের কপি তোলা গেলে রোববার বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করা হবে জানিয়ে মওদুদ বলেন, এটি একটি ফৌজদারি মামলা হলেও তা রাজনৈতিক মামলা হিসেবে পরিচালিত হয়েছে। তাই মামলার রায় আইনসংগত হয়নি।

এক প্রশ্নে জবাবে মওদুদ বলেন, বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না তা আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে জামিনের পর বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের দুর্নীতি মামলার রায়ের পর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ এসব কথা বলেন। এই সংবাদ সম্মেলনে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেইসঙ্গে রায়ের প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পরে সারাদেশে একযোগে বিক্ষোভ ও শনিবার সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ফখরুল। এর আগে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আলাদা সংবাদ সম্মেলন করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনৈতিক সরকার তাদের স্বৈরাচারী ইচ্ছা বাস্তবায়ন করেছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও গত নয়বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অবিচ্ছিন্ন নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে ভুয়া নথি তৈরি করে সাজা দেয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ঘৃণার সঙ্গে এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছি। জনগণও এ রায় মেনে নেবেন না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষতা, নির্বাচন থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে দূরে রাখতে সরকার নীলনকশা তৈরি করেছে। বর্তমান সরকার একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েমে এ সাজা ঘোষণা করেছে। সাজানো এ রায় ঘোষণার জন্য গত তিনদিন ধরে সরকার সারাদেশে কুরুক্ষেত্র বানিয়ে রেখেছে।

এ রায়ের মাধ্যমে দেশের সমস্যা আরো ঘনীভূত হবে এবং নতুন করে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে বিএনপির প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। গত তিনদিনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রায় পক্ষে বা বিপক্ষে গেলে বিএনপি কি ধরনের পদক্ষেপ নেবে গতকাল (বুধবার) বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন। তার নির্দেশ অনুযায়ী সারাদেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডবিধি ১০৯ ও ৪০৯ ধারায় খালেদা জিয়াসহ বাকিদের সাজা দেয়া হয়। বয়স বিবেচনায় খালেদা জিয়ার সাজা কমানো হয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি সব আসামিকে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় এ রায় দেন। মোট ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের বিশেষ অংশ পাঠ করেন বিচারক।

এমএইচএম/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।