‘যতই কাপড় পরানোর চেষ্টা করুন, লজ্জা ঢাকবে না’
উকিল নোটিশ প্রেরণ করে খালেদা জিয়া তথা বিএনপি তাদের দুর্নীতির দায় বা লজ্জা কোনোটাই এড়িয়ে যেতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাকে একজন গুরুজন বলেছিল, কেউ যদি রাস্তায় ন্যাংটা হয়ে যায়, তাকে যদি কেউ কাপড় পরিয়েও দেয় তবুও সে যে একবার ন্যাংটা হয়েছিল, সেই লজ্জা যায় না।’
হাছান বলেন, অতএব, আপনারা শুধু বাংলাদেশের মানুষের কাছেই নয়, পৃথিবীর মানুষের কাছে দুর্নীতির জন্য ন্যাংটা হয়ে গেছেন। যতই কাপড় পরানোর চেষ্টা করুন, আপনাদের লজ্জা ঢাকবে না। সুতরাং এই উকিল নোটিশও পাঠিয়ে কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, আগে শুনতাম চোরের মায়ের বড় গলা। এখন দেখছি শুধু চোরের মায়েরই নয়, চোরের পাহারাদারদেরও বড় গলা। চোরের উকিলরা উকিল নোটিশ পাঠায়, আর চোরের পাহারাদারেরা টেলিভিশনে গলা ফাটায়।
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিকট উকিল নোটিশ কেন? তাদের দুর্নীতির খবর তো বাংলাদেশ সরকার তদন্ত করে বের করিনি। এটি সৌদি সরকারের তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। ১১ জন গ্রেফতার করা দুই সৌদি যুবরাজের জবানবন্দিতে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের দুর্নীতির কথা উঠে এসেছে। এমনকি সৌদি আরব ছাড়া বিশ্বের আরো ১২টি দেশে মিডিয়ায় তারেক রহমান তথা জিয়া পরিবারের বিনিয়োগের খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাই উকিল নোটিশ বিশ্ব মিডিয়াগুলোতে পাঠাল না কেন?
তার মানে, বোঝাই যাচ্ছে, বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর সত্য। শুধু জনগণের দৃষ্টি যাতে তাদের দুর্নীতির ওপর থেকে সড়িয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা যায়, তাই এই উকিল নোটিশ- যোগ করেন হাছান মাহমুদ।
লন্ডনে তরেক রহমানের বিলাসবহুল জীবনযাপনের অর্থের উৎসের ব্যাপারে প্রশ্ন রেখেও তিনি বলেন, লন্ডনের বুকে প্রাসাদ সমান বাড়িতে বসবাস, দামি দামি গাড়িতে চলাফেরা, এমনকি বাংলাদেশ থেকে গৃহপরিচারিকা নিয়ে গিয়ে লন্ডনে কাজ করানো, এসবের যোগান কোথা থেকে আসে?
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাছান বলেন, দুদক দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে। আমি দুদকের নিকট বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত দুর্নীতিরও তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছি এবং সরকারের নিকটও এই অর্থ দেশে ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমরা তো আপনাকে ভদ্র মানুষ হিসেবেই জানি। ভদ্র মানুষের মুখে অভদ্রতা মানায় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কথা বলার সময় আপনার শালীনতা হারিয়ে যাচ্ছে। সমালোচনা করুন অসুবিধা নেই, তবে সেই সমালোচনায় যেনো শালীনতা বা ভদ্রতা বজায় থাকে।
চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন হায়দার চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।
এইউএ/জেডএ/জেআইএম