ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছে : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচনে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোটগ্রহণ। তবে দুপুর না হতেই বেশ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের (বিএনপি) পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম সেখানে (রসিক) সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ইসির ভূমিকা রহস্যজনক। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের (বিএনপি) পোলিং এজেন্ট বের করে দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা।’

রিজভী বলেন, ‘আজ সকাল থেকে সেখানে (রসিক) ভোটগ্রহণ শুরু হলেও গত দু'দিন ধরে ক্ষমতাসীন দল ও জোটের তাণ্ডবে সেখানে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। বিএনপি ও বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, তারা যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়। এ ছাড়া নির্বাচনী এজেন্টদেরও নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, আজ সকালেও কয়েক জায়গায় প্রশাসনের ব্যক্তিদের সহায়তায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর খবর পেয়েছি। সুতরাং রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যে সুষ্ঠু ও অবাধ হবে কি না তা বড় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদ বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পদ মর্যাদায় থাকলেও তিনি চারদিন ধরে রংপুরে অবস্থান করছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মতবিনিময় ও ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির আরেক নেতা ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও রংপুরে অবস্থান করে মিছিল মিটিং করেছেন। যা পুরোপুরি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা নির্লজ্জের মতো নির্বিকার থেকেছে। আসলে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী মহাজোটের খুশি করার কাজে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে, এটা তার একটি উদাহারণ।

এ ছাড়া গত রাতে শহীদুল নামে বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতার ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতারাও প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ১৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২৮টি ভোট কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলছে কমিশন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বেশি। অথচ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

রিজভী বলেন, আমরা শুরু থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বললেও ইসি সেনা মোতায়েন করেনি। বরং সেখানে আনসার সদস্যের নামে আজ নিয়োগ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতাকর্মীদের। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যত সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে তাতে বাস্তবে বেছে বেছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের অনুসারী ক্যাডারদেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে অতীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বারবার রংপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছি এবং নির্বাচন কমিশনকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারের ইশারায় ঠুটো জগন্নাথের মতো নীরবতা পালন করেছে। বিরোধী দলগুলোর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিমাতাসূলভ আচরণ করেছে। সব মিলিয়ে আজকে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপক্ষে হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আবারও গভীর সন্দেহ ও সংশয় প্রকাশ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুস সালাম, মুনির হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএম/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।