জোট শরিকদের নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় খালেদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

জোট শরিকদের সঙ্গে টানা প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়ে রাত পৌনে ১১টায় শেষ হয়।

বৈঠক শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোটের শীর্ষ কয়েকজন নেতা জানান, প্রথমত আগামী দিনের আন্দোলন ও নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডে জোটের শরিকদের নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন খালেদা জিয়া।

জোটের শরিকরাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন। যেকোনো মূল্যে জোটের ঐক্য রক্ষার করার বিষয়টি আলোচনায় বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠকে আটটি বিভাগীয় শহর ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলায় খালেদার সফর নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবেন না- এমন ঘোষণা দিলেও সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি উত্থাপন করেননি তিনি। আগামীতে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এ বিষয়টাকে গুরুত্ব সহকারে সামনে নিয়ে আসা হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের ব্যর্থতা ও এই সমস্যার সমাধানে নানা আলাপ আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়েও আলাপ হয়েছে। জোট থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও আগামী নির্বাচনে শরিক দলগুলোর পছন্দের আসন ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রংপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে জোটের প্রার্থী হবে। তবে শরিক দলের কাউন্সিল প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় বলেও বৈঠকে খালেদা জিয়াকে অবহিত করেন।

জোটের এক শরিক দলের শীর্ষ নেতা জানান, ম্যাডাম বলেছেন একসঙ্গে আন্দোলন করেছি একসঙ্গে নির্বাচন করবো। একসঙ্গে সরকার গঠন করবো। জোট শরিকগুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলেও খালেদা জিয়া আশ্বাস দিয়েছেন। জোট থেকে কাউকে বাদ দেয়া বা নতুন করে রাজনৈতিক দলকে যুক্ত করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান শরিক দলের আরেক শীর্ষ নেতা।

অপর এক নেতা জানান, ম্যাডাম বলেছেন জোট শরিকদের বাদ দিয়ে কিছু করবো না। আমরাও বলেছি আপনাকে ছাড়া আমরাও কিছু করবো না। এ ব্যাপারে ম্যাডামও আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, আমরাও ম্যাডামকে আশ্বস্ত করেছি। এখন থেকে যা হবে সব জোটের ব্যানারে হবে।

তবে বৈঠকে ক্ষমতায় আসার নানা কৌশল নিয়ে আলাপ-আলোচনা করলেও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় তথা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনদুর্ভোগ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়নি বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। এক নেতা জানান, চাল ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে আনার বিষয়ে কোনো কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সিনেট নির্বাচনে যোগ্যদেরকে প্রার্থী করার বিষয়েও বৈঠকে ঐক্যমত হয়েছেন খালেদা জিয়া ও তার শরিকরা। এছাড়াও পেশাজীবী সংগঠনগুলোতে যোগ্য প্রার্থীদেরকে অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়ে মতামত দেয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, সড়কপথে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখতে যাওয়ায় সারাদেশে দলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন উল্লেখ করে খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিভাগ ও জেলা সফরে বের হওয়ার পরামর্শ দেন জোট শরিকরা। তাদের এমন পরামর্শের প্রতিউত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি তার শারীরিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখে সফরসূচি চূড়ান্ত করবেন।

বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টি (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফতে মজলিশের মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকিব, জাগপা সভাপতি রেহানা প্রধান, এনডিপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা, এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি জেবেল রহমান গানি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাছ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।