না.গঞ্জে শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক বখরা আদায়!
নারায়ণগঞ্জে একটি রফতানিমুখী গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা হতে জোর করে ‘বখরা’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে। আড়াইমাস ধরে বন্ধ থাকা ওই কারখানার ২৬২ জন শ্রমিককে মঙ্গলবার বকেয়া বেতন ও বোনাস দেওয়ার সময়ে এ ঘটনায় শ্রমিকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার ফতুল্লা পশ্চিম ইসদাইর এলাকার সেনসিবল ফ্যাশন নামের গার্মেন্টটি গত ২৫ এপ্রিল কোনো নোটিশ ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ধারাবাহিকভাবে শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে অনশন ধর্মঘটের ডাক দেন শ্রমিকরা। এর আগে ১৯ এপ্রিল এলসির মাধ্যমে ১৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা নিয়ে ঋণ পরিশোধ না করায় সেনসিবল ফ্যাশন গার্মেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুজ্জামান প্রিন্সেসহ মালিকপক্ষের ৫ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় জিডি দায়ের করে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) গোলাম মোস্তফা। পরবর্তীতে গার্মেন্টেস গেইটে তালা দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এরপর থেকেই আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকেরা। পরে গত ২৮ জুন বিকেএমইএতে সভায় সভাপতি সেলিম ওসমান এ সঙ্কটের উত্তরণ ঘটান। সেদিন সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিকেএমইএ কার্যালয় থেকে তাদেরকে বকেয়া বেতন ও ঈদ উপলক্ষে বোনাস পরিশোধ করা হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হলে শ্রমিকরা ১ মাসের বেতন নিয়ে পুনরায় কাজে যোগ দেবেন। যদি ৯০ দিনের মধ্যে মালিকপক্ষ কারখানাটি খুলে দিতে না পারনে তাহলে মালিকপক্ষ অবশ্যই শ্রমিকদের এক মাসের বেতন পরিশোধ করে দিতে বাধ্য থাকবে।
বিকেএমইএ এর সহসভাপতি (অর্থ) জিএম ফারুক জানান, ২৬২ জন শ্রমিককে বকেয়া বেতন ভাতা হিসেবে ৩৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা গেছে, বিকেএমইএ এর অফিসে যখন শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয় তখন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম গোলকসহ আরো কয়েকজন।
বেতন নিয়ে শ্রমিকরা বাইরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ওইসব নেতারা তালিকা ধরে স্বাক্ষর গ্রহণ করছেন। আর বেতনের খাম ছিড়ে জোর করে নেওয়া হয় ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা।
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্টের সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম গোলক। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চাঁদাবাজীর কোনো অভিযোগ সত্য না। আমাদের বিগত আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। সেই টাকা পূরণের জন্যই ৫শ করে টাকা নিয়েছি।
মো.শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড/আরআই