‘খালেদার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশ’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেয়া বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির সমাবেশ শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এ অভিযোগ করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময় ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় রয়েছে। বিএনপি যদি ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসে তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ক্ষমার নমুনা ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা। একটাই নমুনা দিলাম। তিনি এখন ক্ষমার রাজনীতি না, ক্ষমার নাটক করছেন। তিনি জানেন তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তার হয়তো দণ্ড হয়ে যাবে। সে কারণে তিনি এখন ক্ষমার নাটক সাজাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, জুলুম তো করেছে বেগম জিয়া ও বিএনপি। তারা ক্ষমতায় থাকতে আমাদের নেতা শাহ এমএইচ কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে খুন করেছে। তাদের হাতে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্তের দাগ এখনও আছে। আওয়ামী লীগ কেন ক্ষমা চাইবে। যিনি জুলুম করেছে তিনি তো আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। তার কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। শেখ হাসিনা তো কোনো অন্যায় করেননি, তিনি কেন ক্ষমা চাইবেন?
বিদেশে এজেন্ট পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে সরকার- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এমন অভিযোগকে হাস্যকর বলে মনে করেন কাদের।
তিনি বলেন, তাকে আমি পরামর্শ দেবো। আপিল বিভাগের যে পাঁচজন বিচারপতি এখন আছে, তাদেরই জিজ্ঞাসা করুন। সরকারই পদত্যাগে বাধ্য করেছে না, তারা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করবেন না এমন বক্তব্য দিয়েছেন। সেটা তিনি (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) ভালো করেই জানেন, এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিদেশে বাংলাদেশের লোক গিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো একজন ব্যক্তিকে পদত্যাগে বাধ্য করাবে এমন অভিযোগ হাস্যকর।
সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কািমশনের অধীনে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সে সময় যে সরকার থাকবে সেই সরকার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো নির্বাচন কমিশনকে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে।
বিএনপি আগামী নির্বাচনে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে। এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তিনি চান না, তিনি চান ২০০১ সালের মতো ম্যাকানিজমের নির্বাচন। সেই জন্য তিনি ইভিএম চান না। আমরা ইভিএম চাই। তবে বিএনপির এমন দাবিকে আমি অযৌক্তিক দেখি না, রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা তার অধিকার আছে। তবে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, তারাই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ সেনা মোতায়েন চায় না, কথাটা ঠিক নয়। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন সময়ের প্রয়োজনে যেখানে দায়িত্ব দিতে পারে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনি তো দুই দফায় দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছেন?’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এইউএ/এসএইচএস/আরআইপি