বড় নিউজ সৃষ্টির জন্য বিএনপিই হামলা চালিয়েছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৯ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৭

বড় নিউজ সৃষ্টির জন্য বিএনপিই সুপরিকল্পিতভাবে নিজেদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়ার পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার বিষয়ে রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম বেগম জিয়ার গাড়িবহরে হামলা, তিনি অক্ষত, গাড়িও অক্ষত; তাহলে হামলা হলো কোথায়? যখন জনতার ঢল নামেনি তখন এ ধরনের একটা ঘটনার প্রয়োজন ছিল, টু মেইক এ বিগ নিউজ; আমরা এটাই মনে করি। তা না হলে তিনি বাই এয়ারে না গিয়ে বাই রোডে কেন কক্সবাজারে গেলেন? তার সঙ্গে লাখ লাখ জনতা, এটা দেখানো? তা যখন হচ্ছিল না তখন ফেনীতে নিজ নির্বাচনী এলাকার কাছে এ ঘটনা ঘটিয়ে দোষ দিলেন সরকারের ঘাড়ে।’

তিনি বলেন, ‘নিজেরা নিজেরা মারামারি করে, নিজেদের সভায় নিজেরাই হামলা চালিয়ে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপানো বিএনপির পুরনো অভ্যাস। বড় একটা নিউজ করার জন্য ফেনীতে গতকাল তারা পরিকল্পিতভাবে নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা তাদের অন্তর্দ্বন্দ্বেরও বিষয়। গত কয়েক দিন ধরে তারা (বিএনপি) নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। নিজেদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে- এটা ফেনীর সাংবাদিকরা ভাল করে জানেন; এটা তারা দেখেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগের ওপর যে ঘটনার দায় চাপানো হচ্ছে এটা তাদের (বিএনপির) নিজেদের সৃষ্টি, তারা সুপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে জনমত কতটা প্রভাবিত হবে তা অচিরেই বোঝা যাবে। মিথ্যের ওপর ভর করে রাজনীতিতে কেউ সুফল বয়ে আনতে পারে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসন চট্টগ্রামে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এ হামলা করেছে- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কাছে খবর আছে ছাত্রদল ও যুবদলের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ওপর দোষ চাপানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া রোহিঙ্গাদের জন্য যদি মানবিক সহায়তা নিয়েই যেতেন, তবে বিমানে যেতেন। বিএনপির অন্য নেতারা গেছেন, ফখরুল সাহেব গেছেন কোনো সমস্যা হয়নি। আমার প্রশ্ন অসুস্থ নেত্রী কেন এত দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার যাবেন? তাই এখানে উপলক্ষ্যটা হচ্ছে মানবিক, উদ্দেশ্য রাজনৈতিক।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি মৌলভীবাজারে ছিলাম, সেখান থেকে মনিটর করেছি। প্রশাসন, পার্টির নেতাকর্মী সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলেছি, বেগম জিয়ার যাত্রাপথে কোনো বাধা দিলে ক্ষতিটা আমাদেরই হবে; লাভ হবে বিএনপির। আমরা জেনে-শুনে কেন নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনব? আমরা শান্তিতে দেশ চালাচ্ছি। অশান্তির আমন্ত্রণ আমরা কেন করব?’

মন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যাটা হয়েছে ফেনী প্রবেশের আগে চৌদ্দগ্রাম সীমান্তে। সেখানে হঠাৎ করে কিছু মোটরসাইকেল এসে ঢিল মেরে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি করে। কিছু গাড়ি ভাঙচুর হয়। সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আওয়ামী লীগ কেন সাংবাদিকদের গাড়ি আক্রমণ করতে যাবে?’

খালেদা জিয়ার সফরের কারণে অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি সেটা বিবেচনা করেননি। ফেনী পর্যন্ত কোথাও ৫ হাজার লোকও জড়ো হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘প্রমাণ হয়ে গেছে জনগণ শেখ হাসিনার সরকারের ওপর খুব খুশি। তিনি মনে করেছিলেন হাজার হাজার গ্রামের মানুষের ঢল নামবে। কোথাও ঢল নেমেছে কিনা সেটা সবাই ভাল করে জানেন।’

বেগম জিয়াকে ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সার্কিট হাউজে ব্যবহারে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি আজকে বলতে চাই অতীতে এই চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শেখ হাসিনাকে ভিআইপি রুম দেওয়া হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা সার্কিট হাউজের আঙিনায় দাড়িয়ে ছিলাম। সেই স্মৃতি আমাদের এখনও মনে আছে। শুধু ওখানে নয়, একই দৃশ্যপট ছিল বরিশালেও। তারপরও আমরা মনে করেছি তারা যদি অধম হয়, আমরা কেন উত্তম হব না।’

তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকতে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিয়েছিল, তাতে তাদেরই ক্ষতি হয়েছিল। সেজন্য তারা ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আমরা একই ক্ষতি গায়ে পড়ে ডেকে আনতে চাই না।’

খালেদা জিয়া কতটুকু ত্রাণ দেবেন- প্রশ্ন তুলে কাদের বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ যে ত্রাণ সড়কপথে উখিয়া-টেকনাফে পাঠাত সব বন্ধ। শত শত টন ত্রাণ সরবরাহ পথ বন্ধ করে দিয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) উখিয়ায় নিজে কিছু ত্রাণ দেবেন। তার মত এমন একজন দায়িত্বশীল নেত্রীর এ আচরণ কি শোভন? ’

আরএমএম/বিএ/এমএমজেড/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।